বাগাতিপাড়ায় স্কুলমাঠ চাষ করতেই ৮ মেট্রিকটন চাউল শেষ !
আব্দুল মজিদ,(নাটোর):নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বড়ালঘাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নয়নে স্কুলের মাঠ সংস্কারের নামে পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে চাষ করে টিআর প্রকল্পের ৮ মেট্রিকটন চাউল লোপাট করা হয়েছে বলে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। এছাড়া নগদ ৩৫ হাজার টাকাসহসহ নিয়োগ বানিজ্যের মাধ্যমে কয়েক লক্ষ টাকারও হদিস মেলেনি স্কুলের উন্নয়নে। লুটপাটের এই অভিযোগের তীর স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দিকে তবে তারা বলেছেন অভিযোগ ভিত্তিহীন কাজ সম্পন্ন করার সকল ডকুমেন্ট সংশি¬ষ্ট অফিসে জমা দেয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী বরাবর প্রেরিত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বড়ালঘাট উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। গত এসএসসি পরীক্ষায় এ বিদ্যালয় থেকে অংশ নিয়েছে মাত্র ৫জন শিক্ষার্থী। বিদ্যালয়ের পড়ালেখার মান উন্নত নয়। এমন না অব্যবস্থার মাঝেও বিভিন্ন সময়ে স্কুলের উন্নয়নে সরকারী সুযোগ সুবিধা প্রদান রয়েছে অব্যাহত। স্কুলের অভিভাবক সদস্য ও স্থানীয়দের অভিযোগ, সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের উন্নয়ণ না করে সরকারী বিভিন্ন বরাদ্ধের অর্থ লুটপাট করে চলেছেন দীর্ঘদিন থেকে। অর্থ লুটপাটের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে বলায় প্রতিবাদ কারীদের মামলার ভয় দেখান শিক্ষক ও সভাপতির লোকজন। সম্প্রতি উন্নয়নের নামে পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে স্কুল মাঠ চাষ করেই লোপাট করা হয়েছে টিআর প্রকল্পের ৮ মেট্রিকটন চাউল। এছাড়া বিভিন্ন মাধ্যমে পাওয়া নগদ ৩৫হাজার টাকাসহ নিয়োগ বানিজ্যে কয়েক লক্ষ টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠলেও স্কুলের উন্নয়নে মেলেনি সে অর্থের কোন হদিস। স্থানীয়দের তথ্য মতে বিদ্যালয়টির মোট শিক্ষার্থী ২৫জন হলেও খাতা কলমে তার সংখ্যা শতাধিক। প্রতিবাদ করায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির রোষানলের শিকার বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘মাঠ সংস্কারের নামে পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে চাষ করে অর্থ লুটপাট ও দূর্নীতির প্রতিবাদ করায় আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজী মামলা করে হয়রানির হুমকি দেয়া হয়েছে। ’
স্কুল মাঠ চাষের জন্য ভাড়া করা পাওয়ার ট্রিলার চালক কানন টিলার ভাড়া দেয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘স্কুলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আমাদের পাওয়ার ট্রিলার ঠিক করেছিল। তাই আমি স্কুল মাঠটি ভালভাবে চাষ দিয়ে দেই।’ তবে ভাড়ার বিষয়টি তার মালিক জানে। অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মুনসুর রহমান বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ১৫০জন, শিক্ষক-কর্মচারী মিলে ১১জন যার মধ্যে বেতন ভুক্ত শিক্ষক ৬জন আর কর্মচারী ৩জন। বরাদ্দকৃত ৮ মেট্রিকটন চাউলের কাজের সমস্ত পেপার্স অফিসে জমা হয়েছে। আর এগুলো আপনি বুঝেনতো অর্ধেক কাজ হয় আর অর্ধেক জানেনতো উপরে দিতে হয়। আর বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটির বাহিরে আমরা কিছু করতে পারিনা জানেনতো।’ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে বলেন, ‘ রাজশাহির “দৈনিক সোনালী বার্তা” ও জাতীয় “দৈনিক বার্তা” পত্রিকাতে ২০০৩ সালে বিজ্ঞপ্তি দিয়েই নিয়োগ দেই। তবে নিয়োগের সময় টাকা নেয়ার কথাটি এড়িয়ে জান। আর স্পেশাল প্রকল্পের নগদ অর্থের মধ্যে এক হাজার টাকা অফিস খরচ বাদে বাকী ৩৪ হাজার টাকার কাজ এখনও চলছে বলে তিনি জানান। ’ এদিকে স্কুলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আণিত অভিযোগ অ¯ী^কার করে বলেন, অভিযোগটি সঠিক নয়। আমরা কাজ করে সমস্ত পেপার্স অফিসে জমা দিয়েছি। কিন্তু পরে আবার ফোন করে জানান, ‘ ভাই বুঝেনতো আমি নতুন সভাপতি হয়েছি, অফিসে দেয়ার পরে যা ছিল কাজ করেছি। আর এসব বিষয় নিয়ে নিউজ না করতেও তিনি অনুরোধ করেন। এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাককে ফোন করা হলে প্রথমে তিনি ভাল ভাবে কথা বলা শুরু করলেও সরকারী প্রকল্পের ওই কাজ নিয়ম মেনে হয়েছে কিনা জানতে তিনি মোটর সাইকেলে আছে কথা বুঝতে পারছেন না পরে কথা বলবেন বলে লাইন কেটে দেন।