অনাগত সন্তানের পিতৃ পরিচয় স্বীকৃতির দাবী বাগেরহাটের শরণখোলায় ১২ বছরের শিশু ৫ মাসের অন্তঃসত্বা, থানায় মামলা
বাগেরহাট প্রতিনিধি:বাগেরহাটের শরণখোলায় ১২ বছরের এক শিশু প্রতিবেশী সোলায়মান মুন্সীর লালশার শিকার হয়ে অন্তঃসত্বা হয়ে পড়েছে। দারিদ্রতার সুযোগে ওই লম্পট শিশুকে একাধিকবার ধর্ষণ করে। এখন সে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্বা বলে পরিবারের লোকজন জানিয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার ধানসাগর ইউনিয়নের উত্তর রাজাপুর গ্রামে। এ ঘটনায় ৩ জনকে আসামী করে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় ধর্ষনের অভিযোগ ও অনাগত সন্তানের পিতৃ পরিচয় নির্দ্ধারনের দাবী জানানো হয়েছে।মামলার এজাহার ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, অন্তঃসত্বা শিশুর পরিবার অত্যন্ত দরিদ্র। বাবা অন্যের ট্রলারে মৎস্য শ্রমিক হিসেবে সাগরে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত থাকেন। আর মা রাস্তার মাটি কাটা শ্রমিকের কাজ করেন। মা-বাবা দুজনেই বাইরে থাকায় মেয়েটি ঘরে একা থাকার সুযোগে প্রতিবেশি সৌদি প্রবাসী আ. বারেক মুন্সীর ছেলে সোলায়মান (২৫) ওই মেয়েটিকে নানা প্রলোভন ও ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এতে সে অন্তঃসত্বা হয়ে পড়লে, উভয় পরিবারের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়। মেয়েটির পরিবারের চাপের মুখে একপর্যায় ধর্ষকের মা ও ভগ্নিপতি ওই মেয়েকে তাদের ঘরের বউ করবেন বলে ধর্ষিতার পরিবারকে আশ্বস্ত করেন। এ ভাবে প্রায় পাঁচ মাস পার হলেও, এক সময় তারা ওই মেয়েকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানায় এবং তাদের ছেলে এ ঘটনার সাথে জড়িত নয় বলে সাফ জানিয়ে দেয়। পরে ধর্ষক সোলায়মানকে তার পরিবার কিছুদিন আগে অন্যত্র বিয়ে করিয়ে তাকে এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়। ঐ মেয়ের পরিবার নিরূপায় হয়ে গত শনিবার রাতে অন্তঃসত্বা শিশুটির মা বাদি হয়ে ধর্ষক সোলায়মান মুন্সী, তার মা ছালেহা বেগম ও ভগ্নিপতি মশিউর মীরসহ তিন জনকে আসামী করে শরণখোলা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। শিশুটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিনুল ইসলাম পিঞ্জু বলেন, হতদরিদ্র ওই পরিবারের উপর যে নির্যাতন করা হয়েছে তা ন্যাক্কারজনক। অসহায় পরিবারটি যাতে আইনি সহায়তা পায়, সে ব্যাপারে তিনি প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছেন। উত্তর রাজাপুর কালভার্ট সংলগ্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যারয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আবু তালেব বলেন, মেয়েটি এক সময় তার স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পড়তো। বছর খানেক ধরে সে স্কুলে আসে না।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রেজাউল করিম জানান, শনিবার রাতে ধর্ষকসহ তিন জনকে আসামী করে মামলা রুজু করা হয়েছে। মার্চ মাসের দিকে ওই মেয়েটি অন্তঃসত্বা হয়েছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বাগেরহাট সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ডাক্তারী পরীক্ষা সম্পন্ন হলে সঠিক তথ্য জানা যাবে। আসামীদের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।