বাগাতিপাড়ায় বড়ালঘাট বালিকা বিদ্যালয়ের বরাদ্ধের অর্থ লুটপাট বাগাতিপাড়ায় স্কুলমাঠ পাওয়ার ট্রিলারে চাষ করেই ৮মেট্রিকটন চাউল শেষ
বাগাতিপাড়া (নাটোর) : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় বড়ালঘাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে উন্নয়নের নামে টিআর প্রকল্পের ৮ মেট্রিকটন চাউল ও নগদ অর্থ সহ নিয়োগ বানিজ্যের মাধ্যমে কয়েক লক্ষ টাকা প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লুটপাট করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। গত ২০১৫ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল মাত্র ৫জন। বিদ্যালয়ের পড়াশুনাও মানসম্মত নয়। শিক্ষার্থী সংখ্যা কম হলেও বিভিন্ন সময়ে স্কুলের উন্নয়নে সরকারী সুযোগ সুবিধা অব্যাহত রয়েছে। স্কুলের অভিভাবক সদস্য ও স্থানীয়দের অভিযোগ সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের উন্নয়ণ না করে সরকারী বিভিন্ন বরাদ্ধের অর্থ লুটপাট করছে। তাদের এই অর্থ লুটপাটের বিরুদ্ধে মৌখিকভাবে বলার পরেও নিজেদের সংশোধন না করে প্রতিবাদ কারীদের মামলার ভয় দেখানো হয়। সম্প্রতি টিআর প্রকল্পের ৮ মেট্রিকটন চাউল পেয়ে পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে স্কুল মাঠ চাষ করে দায়িত্ব শেষ করেছেন। আবার নগদ ৩৫হাজার টাকা সহ নিয়োগ বানিজ্যের মাধ্যমে কয়েক লক্ষ টাকা পাওয়ার পরেও উন্নয়নের ছোয়া লাগেনী বিদ্যালয়টিতে। বিদ্যালয়ের উন্নয়ন থেমে থাকলেও সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক এবং সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের উন্নয়ন ঠিক পুষিয়ে নিচ্ছেন। বিদ্যালয়টিতে ২৫জন শিক্ষার্থী থাকলেও খাতা কলমে বেশী ছাত্রী দেখানোর অভিযোগ স্থানীয়দের।
ওই বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘৮টন চাউল পাওয়ার পরে স্কুল মাঠে পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে চাষ করা হয়। সভাপতি ও প্রধান শিক্ষকের সকল দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলার কারনে আমাকে চাঁদাবাজী মামলায় জেল খাটাবে বলে ভয় দেখানো হচ্ছে। ’ পাওয়ার ট্রিলার এর ড্রাইভার কানন স্কুল মাঠ চাষ দেয়ার কথা খুব সরলভাবেই স্বিকার করে বলেন, ‘স্কুলের সভাপতি রফিকুল ইসলাম আমাদের পাওয়ার ট্রিলার ঠিক করেছিল। তাই আমি স্কুল মাঠটি ভালভাবে চাষ দিয়ে দেই।’
বড়ালঘাট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক মুনসুর রহমান অভিযোগের বিষয়ে বলেন, ‘আমার বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী ১৫০জন, শিক্ষক-কর্মচারী মিলে ১১জন যার মধ্যে বেতন ভুক্ত শিক্ষক ৬জন আর কর্মচারী ৩জন। ওই ৮মেট্রিকটন মালের কাজ হয়েছে এবং তার সমস্ত পেপার্স অফিসে জমা হয়েছে। আর এগুলো আপনি বুঝেনতো অর্ধেক কাজ হয় আর অর্ধেক জানেনতো উপরে দিতে হয়। আর বিদ্যালয়ের সভাপতি ও ম্যানেজিং কমিটির বাহিরে আমরা কিছু করতে পারিনা জানেনতো।’ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করে শিক্ষক নিয়োগের বিষয়ে বলেন, ‘ রাজশাহির “দৈনিক সোনালী বার্তা” ও জাতীয় “দৈনিক বার্তা” পত্রিকাতে ২০০৩ সালে বিজ্ঞপ্তি দিয়েই নিয়োগ দেই। কিন্তু নিয়োগের অর্থ নেয়ার কথাটি এড়িয়ে জান। আর স্পেশাল প্রকল্পের নগদ অর্থের মধ্যে এক হাজার টাকা অফিস খরচ বাদে বাকী ৩৪ হাজার টাকার কাজ এখনও চলছে। ’
এদিকে সভাপতি রফিকুল ইসলাম অভিযোগ অস্বিকার করে বলেন, অভিযোগ সঠিক নয়। আমরা কাজ করে সমস্ত পেপার্স অফিসে জমা দিয়েছি। কিন্তু পরে আবার ফোন করে জানান, ‘ ভাই বুঝেনতো আমি নতুন সভাপতি হয়েছি, অফিসে দেয়ার পরে যা ছিল কাজ করেছি। আর এটা নিয়ে নিউজ না করতে অনুরোধ করেন।
সরকারী প্রকল্পের ওই সমস্ত কাজ সঠিকভাবে হয়েছে কিনা জানতে বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুর রাজ্জাককে ফোন করা হলে তিনি ব্যস্ততা দেখান এবং পরে ফোন করে জানাতে চান। কিন্তু পরে তাকে বারবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নাই।