ভোগান্তিতে সাধারণ বিকাশ গ্রাহক ডিলারের স্বেচ্ছাচারিতায় পথে বসতে চলেছে লোহাগড়ার বিকাশ এজেন্ট
লোহাগড়া(নড়াইল) : নড়াইলের লোহাগড়া এবং কালিয়া উপজেলায় বিকাশ লিঃ কর্তৃক দায়িত্বরত ডিস্ট্রিবিউটর মেসার্স মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান (প্রাঃ) লিঃ এর দায়িত্ব হিনতা এবং অপরিকল্পিত লেনদেন এর প্রভাবে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন উপজেলা দুটির শতাধিক বিকাশ এজেন্ট। যার ফলে অসহনীয় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ বিকাশ গ্রাহক। ঈদকে সামনে রেখে বাড়তি ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে বিকাশ গ্রাহকদের। বিকাশ গ্রাহক নাছিমা খানম এই প্রতিনিধিকে বলেন, “আমি মানিকগঞ্জের কোন বিকাশ দোকান থেকে টাকা না পেয়ে ১শ ৫০ টাকা খরচ করে ১০ হাজার টাকা বিকাশ থেকে তুলতে লোহাগড়ায় এসেছি, এখানেও দশ দোকান ঘুরে মাত্র ৩ হাজার টাকা বের করেছি, বাচ্চাদের ঈদের জামা-কাপড় ও বাজার করতে পারছি না”।
দ্রুত টাকা পাবার জন্য প্রতি হাজারে ২০টাকা গুনেও সুবিধা পাচ্ছি না, এরকম প্রায় প্রতিটি বিকাশ গ্রাহকের মুখে একই কথা। রাজুপুর গ্রামের জসিম বলেন, “আমার মামা ঈদের খরচ বাবদ বিকাশ করে ৪ হাজার টাকা দেছে, আজ দুইদিন ঘুরে ৩ হাজার টাকা ক্যাশ করেছি অনেক কষ্টে, যে দোকানেই যাই সবাই বলে টাকা নেই, ডিলার ঠিকমত টাকা দেচ্ছে না”।
মানিকগঞ্জ বাজারের বিকাশ এজেন্ট কাজী টেইলার্স এর প্রোপাইটর মোঃ তরিকুল কাজী জনান, আমাকে ডিলার মোটেও টাকা দিচ্ছে না, কারন জানতে চাইলে ক্ষোভপ্রকাশ করে তিনি বলেন, “কারনটা বুঝিনা ভাই, ডিস্ট্রিবিউটারের সাথে মারামারি করে তো পারবোনা, ঈদের পরে সবাই মিলে বসে সিদ্ধান্ত নেব। তিনি আরও বলেন, কয়েক দিন আগে বিএসএ হিরক আমার ৫ হাজার টাকা গায়েব করে দিচ্ছিল। অনেক কাঠখড়ি পুড়িয়ে ৩ দিন পরে ঐ টাকা ফেরত পাই”।
লোহাগড়া বাজারের বিকাশ এজেন্ট ডাব্লিউ পি কে এন্টার প্রাইজের প্রোপাইটর মোঃ জাকারিয়া প্রিন্স বলেন,“ডিলারের বি এস এ আমার দোকানে কয়েক দিন ধরে টাকা দিতে আসছে না। বিষয়টি টেরিটরি ম্যানেজার বরুন কুমারকে জানালে তিনি আমার কথা গুলো শুনলেন, তেমন কোন সদুত্তর দিলেন না”।
লক্ষীপাশা চৌরাস্তার বিকাশ এজেন্ট মিতালী টেলিকমের সত্বাধীকারী মোঃ তছলু মিয়া এই বিকাশ ডিলারের স্বেচ্ছাচারিতার শিকারে দেউলিয়া হয়ে ঘর-সংসার ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক লোহাগড়ার বেশ কয়েকজন এজেন্ট সাংবাদিকদের জানান, আমরা সবাই এই ডিলারের অত্যাচারে অতিষ্ট। এই বিষয় গুলি টেরিটরি ম্যানেজা বরুন কুমার-কে একাধিক বার জানিয়েও কোন ফল পাইনাই। তিনি আমাদের দোকান গুলোতে ঠিক মত ভিজিট করেন না। সবসময় ডিলারের পক্ষনিয়ে আমাদের ভুলভাল বোঝানের চেষ্টা করেন।
এ বিষয়ে টেরিটরি ম্যানেজার বরুন কুমারের নিকট জানতে চাইতে তিনি সু-কৌশলে বিষয়টি এড়িয়ে বলেন, “কর্তৃপক্ষের অনুমোতি ছাড়া সাংবাদিকদের সাথে কথা বলা নিষেধ”।
নড়াইল ডিস্ট্রিবিউটর হাউজ মেসার্স মোঃ ওয়াহিদুজ্জামান (প্রাঃ) লিঃ এর প্রতিনিধি শান্টু এর নিকট জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে এবং অশ্লীলভাষায় সাংবাদিকদের বলেন,“ আমার নিয়োমে যদি এজেন্টরা চলে তাহলে এজেন্ট থাকবে, নইলে দোকানদারি করার দরকার নেই”।
এলাকার সচেতন মহলের দাবি, এই মুহুর্তেই যতাযথ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত পূর্বক বাংলাদেশ ব্যাংক এর নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে বিকাশ গ্রাহকদের লেনদেন নিশ্চিত করবেন।