বাগাতিপাড়ায় এলজিইডি’র কাজ সম্পন্ন না করেই পুরো টাকা উত্তোলন
বাগাতিপাড়া(নাটোর) : নাটোরের বাগাতিপাড়ায় কাজ শেষ না করেই এলজিইডি কর্তৃপক্ষ ১৩ লক্ষ ৬১হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ৩০জুন কাজ শেষ করার কথা থাকলেও এখনো অসম্পন্ন রয়েছে বেশির ভাগ কাজ। আর যেটুুকু হয়েছে তাও হয়েছে নি¤œমানের। এদিকে টেন্ডারকৃত প্রতিষ্ঠান কাজ না করে ২৫ভাগ লাভে পেয়ে কাজ বিক্রি করেছে ক্ষমতাশীন দলের এক নেতার কাছে। অপরদিকে প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই টাকা উত্তোলন করায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
বাগাতিপাড়া এলজিইডি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাগাতিপাড়া উপজেলা পরিষদ কর্তৃক ২০১৪-১৫ অর্থ বছরে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর আওতায় বিভিন্ন ইউনিয়নে ১৭ টি প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য এডিপি’র ১৩ লক্ষ ৬১হাজার টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। এর মধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নের ১১টি রাস্তা এইচবিবি করন, সেনিটেশন সামগ্রি বিতরণ, হাটের সেডঘর নির্মান, সিঁড়ি নির্মান, নলকুপ স্থাপন ও ফুটবল বিতরন সহ বেশ কিছু কাজ করার কথা ছিল।
তবে কোথায় কোন গ্রামে ৫০হাজার টাকার সেনিটেশন এবং কোন ক্লাবে বা কোন প্রতিষ্ঠানে ৫০হাজার টাকার ফুটবল বিতরন করা হয়েছে তার উত্তর মেলেনি কর্তা ব্যক্তিদের কাছ থেকে। এদিকে ১লক্ষ টাকা ব্যয়ে সোনাপুর বাজারে শেড ঘর নির্মান, ৩০হাজার টাকায় দয়ারামপুর ইউনিয়নের কাদিরাবাদ কাজীপাড়া আহমদিয়া আলিম মাদ্রাসার সিঁড়ি নির্মান ও ৮১ হাজার টাকা ব্যয়ে স্যাপার এ্যানজেলিক মেলেনিয়াম স্কুল এর অভিভাবক শেড নির্মানের কথা থাকলেও এখনো কোন কাজ শুরুই করা হয়নি।
এছাড়া অভিযোগ রয়েছে এইচবিবি করনের কাজটি ১নম্বর ইট দিয়ে করার কথা থাকলেও তা করা হয়েছে ২/৩ নম্বর ইট দিয়ে। চুক্তি নেয়া ব্যক্তিরা রাস্তায় তড়িঘড়ি করে নি¤œমানের ইট কোনরুপ পাড়লেও, ঠিকঠাক মতো বালু না দিয়েই কাজ শেষ করা হয়েছে স্থানীয়রা অভিযোগ করেন।
উপজেলার ৩নং বাগাতিপাড়া ইউনিয়নের বিলগোপাল হাটী গ্রামের মনোতস , আহসান হাবিব, নবীউল জানান, ঠিকাদাররা অনেক লোকজন নিয়ে এসে কয়েক ঘন্টার মধ্যে খুবই খারাপ মানের ইট দিয়ে এই সামান্য কাজ করে চলে যায়। কিছু যায়গাতে এখনো ইট পাড়া হয় নাই রাস্তা খুড়ে রেখে চলে গেছে। আবার যতটুকু ইট পাড়া হয়েছে তাও ঠিকভাবে বালুদিয়ে ঢেকে দিয়ে যায়নি। আর এ সময় স্থানীয়রা নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদাররা সে কথায় কর্ণপাত করেনি।
এদিকে উপজেলার কসবে মালঞ্চি হারুনের বাড়ীর নিকট পাকা রাস্তা হতে তোফাজ্জলের বাড়ী পর্যন্ত এইচবিবি করনের কাজ করার কথা থাকলেও সেই রাস্তাতে কোনরুপ ইট ,বালু বা কাজের কোন আলামতের দেখা মেলেনি।
১০টি নলকুপের জন্য ১লক্ষ ১০হাজার টাকা ররাদ্ধ রয়েছে। এদিকে সরেজমিনে গিয়ে, বরাদ্ধকৃত অর্থের চেয়ে অনেক কম মূল্যে নলকুপ স্থাপনের প্রমান মিলেছে। ১নং পাঁকা ইউনিয়নের বেগুনিয়া কবর স্থানে একটি নলকুপ বসানোর পর থেকেই তাতে পানি উঠছে না। বেগুনিয়া কবর স্থান এলাকার ফজলে ফারুক , আলাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সেন্টু বলেন, আমাদের সামনে নেটসহ ৪টি পাইপ দিয়ে ৯০ফিটে নলকুপ স্থাপনের কাজ শেষ করা হয়েছে। এতো কম গভীরতায় এখানে পানি উঠেনা বিষয়টি বলার পরেও ঠিকাদারের লোকজন ২টি পাইপ ফেরত নিয়ে চলে গেছে।
এদিকে অনেক কাজ অসম্পন্ন থাকলেও তার পুরো টাকাই উত্তোলন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে বাগাতিপাড়া উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ মজাহার আলী অভিযোগের সত্যতা ¯ী^কার করে বলেন, আমি কাজ গুলো এখনো নিজে দেখি নাই আমাদের অফিসের সহকারী ইঞ্জিনিয়ার আলম রাস্তার কাজগুলো দেখ ভাল করেছেন। আর বৃষ্টিজনিত আবহাওয়ার কারনেই কিছু ঠিকাদাররা তাদের কাজ শেষ করতে পারেন নাই।