পাখিদের অজানা কথা ॥ চড়–ই পাখি
আব্দুল কাদের : বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আগেই লিখেছিলেন, বহু পথ ঘুরে বহু ক্রোশ দুরে দেখিতে গিয়াছি পর্বত মালা, দেখিতে গিয়াছি সিন্ধু। দেখা হয় নাই চক্ষু মোলিয়া। ঘর হতে দুই পা ফেলিয়া একটি ধানের শীষের উপর একটি শিশির বিন্দু। অনেকের কাছে এক প্রকার অবহেলায় থেকে যায় আমাদের এসব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। অথচ আমাদের দেশের বৈচিত্রময় নানা প্রাণী ও পাখিদের জীবনেও আছে অনেক মজার মজার ঘটনা। এবার চেনাজানা কয়েকটি পাখির মধ্যে ১টি নাম চড়–ই পাখি। চড়–ই পাখির ইংরেজী নাম যড়ঁংব ংঢ়ধৎৎড়ি যার বৈজ্ঞানিক নাম ঢ়ধংংবৎ ফড়সবংরপঁং. চড়–ই অনেকটা সাধারণ পাখি। শহরে গ্রামে সর্বত্রই এর সমান বিচরণ। সাধারণত দল বেধে থাকে।
চড়াই বা চড়–ই যে কোন লোকালয়ের আশেপাশে একটি সুপরিচিত পাখি। এরা জনবসতির মধ্যে থাকতে ভালবাসে তাই এদের ইংরেজী নাম হাউস স্প্যারো অর্থাৎ গৃহস্থলির চড়–ই। এরা খড়কুটো, শুকনো ঘাস, পাতা দিয়ে কড়ি কাঠে, ঘড়ের কার্নিসে বাসা বাঁধে। সমস্ত দিন এরা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ায়। মাটি থেকে পোকা মাকড় ও শস্য দানা খুটে খায়। ডাকাডাকি করার আগে সব চড়–ই একত্রিত হয়। তারপর শুরু হয় কিচির মিচির ডাক। গ্রামে দেখা যায় উঠানে ধান-চাল ছিটিয়ে দল বেধেঁ চড়–ই এসে উঠোনে বসে খুটিয়ে খুটিয়ে ধান-চাল খায় আর কিচিরমিচির করে থাকে। আর এরা শহরে বাসার ভেন্টিলেটরে বাসা বাঁধে। এছাড়া রাস্তার বিদ্যুতের খুৃটিতেও বাসা বেধেঁ থাকে। মা চড়–ুই বাসায় ডিম পারে। পালাক্রমে উভয়ই তা দিয়ে বাচ্চা ফুটায়। সেই বাচ্চাকে বড় করার জন্য তারা উভয়ই খাদ্য সংগ্রহ করে বাসায় এসে বাচ্চাদের খাওয়ায়। একটু উড়া শিখলেই বাচ্চাদের সাথে রাখে এবং পোকামাকড় ধরে খাওয়ায়। চড়–ই পাখি বাংলাদেশের সর্বত্রই দেখা যায়। এরা পাখিদের মধ্যে ছোট হলেও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সৃষ্টি করে থাকে।