খুলনা ঐতিহ্যবাহী বড়বাজারটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ
বি.এম. রাকিব হাসান, খুলনা ব্যুরো: খুলনা ঐতিহ্যবাহী বড়বাজারটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বড় বাজারের ওয়েষ্ট মেকট রোডের দুই পার্শ্বে যে সমস্ত ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলো রয়েছে তা যেকোন মূহুর্তে ধ্বসে বড়ধরনের দুর্ঘটনারসহ প্রাণীহানীর আশংকা রয়েছে। এ অবস্থায় দীর্ঘদিন যাবত বড় বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে আতংক বিরাজ করছে। এ প্রতিবেদককে এমন অভিযোগ করেন বাজারে আসা অধিকাংশ ক্রেতা-বিক্রেতারা। খুলনা বড় বাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে জানা যায়, প্রাচীনতম এই বাজারটির দুই পাশে তরি-তরকারী, মুরগী-গরুর মাংস, পান-সুপারী, মুদি-মনোহারীসহ প্রায় ৩৫০টি দোকান রয়েছে। কেসিসি এইসব দোকান থেকে প্রতিদিন ৫, ৮ ও ১০ টাকা হারে টোল নিয়ে থাকে। দীর্ঘ দিনের রাস্তা ও ড্রেনের সংস্কার করা হলেও ঝুকিপূর্ণ ভবন ও টয়লেটের সমস্যার কারণে বাজারের অভ্যন্তরে বিক্রেতারা ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। প্রায় ছয়শত জনসাধারণের জন্য ৫টি টয়লেট থাকলেও সবকটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে। সরেজমিনে তদন্তে জানা যায়, দীর্ঘদিন যাবত এ সমস্ত টয়লেটগুলি ময়লা আবর্জনায় ভরে রয়েছে। বাজারের দোকানদারদের টয়লেটের প্রয়োজন হলে বাধ্য হয়ে তারা পার্শ্ববর্তী মসজিদ ও মাদ্রাসার টয়লেট ব্যবহার করে তাদের প্রাকৃতিক প্রয়োজন মেটায়। এমন অভিযোগ করলেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাছ পট্টির অনেকেই। দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে বড়বাজারের রাস্তা ও ড্রেনেস ব্যবস্থার উন্নত হলেও টয়লেট ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে বাজারের দোকানদারদের অভিযোগ রয়েছে। তারা আরও অভিযোগে বলেন, এ সমস্ত বিষয়গুলি কর্তৃপক্ষের নজরদারী জরুরী হয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও বাজারের প্রবেশের মুল রাস্তায় রিক্সা, ভ্যান ও ঠেলাগাড়ী চলাচল করার কারণে ক্রেতাদের বাজার অভ্যন্তরে ঢুকতে দৈনন্দিন ভোগান্তি পোহাতে হয় বলে অভিযোগে প্রকাশ। খুলনা বড়বাজার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সহ-সভাপতি মাহমুদ হাসান মুছা বলেন, বিগত মেয়র ও ২১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের প্রচেষ্টায় রাস্তা ও ড্রেনের দীর্ঘদিনের সমস্যার সমাধান হয়েছে। আর বাকী যে সমস্ত সমস্যা সেগুলি অচিরেই সমাধান হবে বলে আমরা আশা করি। অন্য দিকে রাস্তা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার কোন সমস্যা নেই বলে বাজার কর্তৃপক্ষ জানায়। তবে মাছ পট্টির ব্যবসায়ীদের অভিযোগ কেসিসির পক্ষ থেকে ড্রেন পরিস্কার ও ঝাড়–দারের ব্যবস্থা থাকলেও মাছ পট্টির জন্য আলাদা কোন শ্রমিক নেই। যার ফলে আমরা নিজেদের উদ্যোগে মাছ পট্টি পয়পরিস্কারের ব্যবস্থা করেছি। জনস্বার্থে প্রাচীন এই বাজারটির ঐতিহ্য ধরে রাখতে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলি অপসারণ করা জরুরী হয়ে পড়েছে বলে স্থানীয় এলাকাবাসী মতপ্রকাশ করেছেন। তা না হলে এসমস্ত ভবনগুলি ভূমিকম্পে যে কোন সময় ধ্বসে বাজারের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মধ্যে বড় ধরনের দুর্ঘটনাসহ প্রাণহানীর আশংকা রয়েছে। বড়বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি, ক্রেতা-বিক্রেতা ও এলাকাবাসী এই সমস্ত সমস্যাগুলি জরুরি ভিত্তিতে সমাধানের জন্য কেসিসি’র উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।