সাপাহারে সিধু-কানু দিবসে আদিবাসী ক্ষেতমজুর সমাবেশ অনুষ্ঠিত
সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: নওগাঁর সাপাহারে মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় কৃষক-ক্ষেতমজুর ও আদিবাসীদের অধিকার আদায়ের লক্ষে সাঁওতাল বিদ্রোহের মহান নায়ক সিধু-কানু স্মরণে সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট নওগাঁ জেলার উদ্যোগে উপজেলার জিরো পয়েন্টে অবস্থিত স্বাধীনতার মুক্ত মঞ্চে আদিবাসী সমাবেশ অনুষ্টিত হয়েছে। নওগাঁ জেলা আহবায়ক কমরেড মঙ্গল কিসকুর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সমাবেশে সরকারের বাজেট বিরোধী বক্তব্য সহ মেহনতী ক্ষেতমজুর সাধারণ মানুষের প্রাপ্য অধিকার আদায়ে সাঁওতাল বিদ্রোহের লড়াই থেকে শিক্ষা নিয়ে সংগ্রাম এগিয়ে নেয়ার উপর গুরুত্ব রেখে বক্তব্য প্রদান করেন সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্টোর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড বজলুর রশিদ ফিরোজ, বাসদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য কমরেড জাহেদুল হক মিলু, জেলা গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুত, বন্দর রক্ষা জাতিয় কমিটির সাপাহার উপজেলা আহবায়ক মুক্তিযোদ্ধা কমরেড আলতাফুল হক চৌধুরী আরব, বাসদ জয়পুর হাট শাখার আহবায়ক অধ্যক্ষ ওয়াজেদ পারভেজ, নওগাঁ জেলা বাসদের সমন্বয়ক কমরেড জয়নাল আবেদীন মুকুল, করেড দেবলাল টুডু, কালিপদ সরকার, আব্দুল আজিজ, রবিউল প্রমুখ। সমাবেশের পূর্বে সমাজতান্ত্রিক দলের পক্ষ থেকে এক বিশাল মিছিল মুক্ত মঞ্চ চত্ত্বর হতে বের হয়ে সদরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিন করে। অনুষ্ঠানে বক্তরা বলেন আজ থেকে ১৬০ বছার আগে কৃষক-ক্ষেতমজুরের সংকট মোকাবেলায় সিধু-কানু-ভৈরব-ঝালুমনি ও ফূলমনির নেতৃত্বে সাঁওতাল বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল। সেই বিদ্রোহের পথ ধরে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও এ দেশের কৃষক-ক্ষেতমজুর ও আদিবাসীদের দুঃখের অবসান আজও হয়নি। গত ২২জুন পততলার আকবারপুর আদিবাসী ও ভূমিহিনদের উচ্ছেদ করার লক্ষে ভূমি দস্যু আব্দুল মতিন ৭ম শ্রেণীর ছাত্র আদিবাসী শিশু মিথুন খালকোকে গুলি করে হত্যা করে। বসতবাড়ীতে অগ্নী সংযোগ ও লুটপাট করে। আল ফ্রেড সরেন, জাম্বুচরের হত্যার বিচার এখনও হয়নি। প্রতিদিন আদিবাসীদের ভূমি বেদখল হয়ে যাচ্ছে। আদিবাসীদের দীর্ঘ দিনের দাবী আলাদা ভূমি কমিশন গঠন ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। কৃষক ফসলের ন্যায্য মূল্য না পেয়ে দিনে দিনে নিঃস্ব হচ্ছে। ক্ষেতমজুরদের সারা বছর কাজের কোন নিশ্চয়তা নেই, পদে পদে মানুষের মৌলিক গনতান্ত্রিক অধিকার হরন করা হচ্ছে। কেড়ে নেয়া হচ্ছে ভোটের অধিকার। ১৬০বছর আগে সরকারের পক্ষপাতিত্ব মূলক আচরণ, পুলিশ প্রশাসনের দুর্নীতি ও ব্যাপারীদের শোষন মূলক আচরণনের বিরুদ্ধে সিধু-কানু স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার যে সংগ্রাম শুরু করেছিলেন তার শেষ এখনো হয়নি। স্বাধীন দেশে পুঁজিবাদী ব্যাবস্থায় যে সংকট সৃষ্টি হয়েছে তার বিরুদ্ধে লড়তে হলে একটি সঠিক বিপ্লবী পার্টির নেতৃত্বে বাম গনতান্ত্রিক বিকল্প শক্তি গড়ে তুলতে হবে। প্রতিষ্ঠা করতে হবে ভোটাধীকার সহ সকল গনতান্ত্রিক অধিকার নির্মান করতে হবে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। তবেই সিধু-কানুর সংগ্রামের প্রতি সত্যিকার শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।