চুয়াডাঙ্গার নতুন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুসের সঙ্গে সাংবাদিকদের মতবিনিময়
হাবিবুর রহমান,চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধিঃ চুয়াডাঙ্গার নতুন জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুসের সঙ্গে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ২টার সময় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পরিচিতি পর্বের পর নতুন জেলা প্রশাসকের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় অংশ নেন এনটিভি ও দৈনিক মানবজমিনের এবং রেডিও আমার চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি এডভোকেট রফিকুল ইসলাম, জিটিভি ও দৈনিক ভোরের পাতা এবং দ্য রিপোর্ট টুয়েন্টিফোর ডট কমের চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি রিফাত রহমান, মাছরাঙা টিভি ও রেডিও টুডের জেলা প্রতিনিধি ফাইজার চৌধুরী, দৈনিক প্রথম আলো ও এবিসি রেডিও’র চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি শাহ আলম সনি, বাংলাভিশন টিভির চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি এবং দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকার সম্পাদক ও প্রশাসক সরদার আল আমিন, দৈনিক আমাদের সময় চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি ও দৈনিক আমার সংবাদের প্রধান সম্পাদক নাসির উদ্দিন আহমেদ, চ্যানেল ২৪ ও দৈনিক যায়যায় দিনের চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি রেজাউল করিম লিটন ও দেশ টিভির চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি খাইরুজ্জামান সেতু। মতবিনিময়ে চুয়াডাঙ্গা-ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় বর্ডার হাট ও আলোকিত সীমান্ত প্রকল্প শুরু করার বিষয়ে বিগত জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন কি কারনে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রস্তাবনা পাঠায়নি সে বিষয়ে আলোচনা উঠে আসে। আলোচনায় বলা হয়, সীমান্তে চোরাচালন রোধ করার জন্যই বর্ডার হাট বসানোর ক্ষেত্রে ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। ভারত থেকে যে ধরনের নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল অবৈধ উপায়ে বাংলাদেশে আসে, বর্ডার হাট থাকলে সে গুলোই সেখানেই বেচাকেনা সম্ভব হয়। এ ক্ষেত্রে চোরাচালান কমে আসার সম্ভবনা থাকে। এছাড়া ভারত সীমান্তবর্তী এলাকায় চোরাচালনসহ বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের সে সকল কর্মকান্ড থেকে ফিরিয়ে এনে বিভিন্ন লাভ জনক কাজে সংপৃক্ত করে তাদের জীবিকা নির্বাহের জন্যই “ আলোকিত সীমান্ত” নামে এ সরকার প্রকল্প চালু করেছে। কিন্তু অদূরদর্শীতা ও গুরুত্বহীনতার কারনে বিগত দু’বছরের অধিক সময় পরেও জেলা প্রশাসকের দফতর থেকে কোন প্রস্তাবনা পাঠানো হয়নি।
সাংবাদিকরা আলোচনায় বলেন, বিগত জেলা প্রশাসক ঐচ্ছিক তহবিলে টাকা নিয়ে চুয়াডাঙ্গায় যথেচ্ছা অশিলল যাত্রা,নাচ, ভ্যারাইটি শো’র অনুমোদন দিয়ে জেলার জনপদ কুলশিত করে গেছে। এবারও যেন সে ধরনের কোন পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয় সে দিকে নতুন জেলা প্রশাসকে দৃষ্টি আকর্শন করেন সাংবাদিকরা। তাছাড়া একটি সিন্ডিকেট ( সব দল মিলিয়ে) চুয়াডাঙ্গার প্রশিদ্ধ পশুর হাট ডুগডুগি ও শিয়ালমারী হাটের ইজারা সংক্রান্ত বিষয়ে উচ্চ আদালত থেকে তাদের অনুকুলে ইজারার অনুমোদন ও টোল তোলার বিষয়ে একটি নির্দেশনা নিয়ে এসে তা প্রতি ছয় মাস পর পর উচ্চ আদালতের অনুমোদন নবায়ন করে আনলেও জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তা বাতিলের জন্য যথেষ্ঠ চেষ্টা করা হয়নি। অভিযোগ রয়েছে তৎকালীন জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইনকে প্রতি মাসে ওই সিন্ডিকেট প্রায় ২০ লাখ টাকা করে পরিশোধ করার কারনেই এটা নিয়ে গোপন সমঝোতা চলে আসছে। এছাড়া বদরগঞ্জ ও সরোজগঞ্জ হাট দুটি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যাকেতাকে দেওয়ার কারনে এ হাট গুলো থেকে সরকার কোটি কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা ভি.জে. সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রতিদিন এসেম্বলী এবং জাতীয় সংগীত গাওয়া হয়না। এসেম্বলী হলেও সেখানে শিক্ষকরা থাকার প্রয়োজনীয়তা বোধ করেন না।সে কারনে বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীরা এসেম্বলী গুরুত্বহীন মনে করে ইয়ার্কি আড্ডা মেরে শ্রেনী কক্ষে চলে যায়। এ দু’ বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে কোন শৃঙ্খলা নেই। তারা বিদ্যালয়ে খেয়াল খুশি মত ক্লাস নেয়। বিদ্যালয়ে ভাল পাঠদান না করে শিক্ষকরা তাদের নিয়ন্ত্রীত অবৈধ কোচিং এ যেতে ছাত্র-ছাত্রীদের বাধ্য করে। যেহেতু পদাধীকার বলে জেলা প্রশাসক এ দু’ বিদ্যালয়ের সভাপতি সেহেতু এ গুলোসহ আরো আলোচিত বিষয় গুলোর দিকে দৃষ্টি দেওয়ার জন্যই সাংবাদিকরা নতুন জেলা প্রশাসককে অনুরোধ জানান।
মতবিনিময় সভায় চুয়াডাঙ্গা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আনজুমান আরা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আবু সাঈদসহ চুয়াডাঙ্গায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কর্মরত সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষের বক্তব্যে জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস চুয়াডাঙ্গার সাংবাদিকদের কাছ থেকে সহযোগীতা কামনা করেন।