স্বামী পরিত্যাক্ত মহিলার সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে
আব্দুল কাদের: আমাদের দেশে স্বামী পরিত্যাক্ত এবং স্বামীর পরিবারের সদস্যের দ্বারা বিতারতি মহিলাদেওর সংখ্যা দিনের পর দিন আশংঙ্কাহারে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। এসব মহিলাদের মধ্যে যৌতুকের দাবী, স্বমীর মৃত্যু জনিত কারণে বিতারিত ছাড়াও বাল্য বিবাহের কারণে পরিত্যাক্ত ও বিতারিত বালিকার সংখ্যাও বাড়ছে। এসব মহিলাদের মধ্যে যাদের বয়স ২০থেকে ২৫ তাদেরই বেশী কষ্টের মধ্যে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। কারণ তাদের পক্ষে বাড়ীর বাইরে গিয়ে কাজ করা দুরুহ ব্যপার। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই মহিলাদের অবস্থান এখনো পুরুষদের নিচে। তবে ধনী ও উন্নত দেশে শ্রমশক্তির অভাব থাকায় সেখানে মহিলাদের কাজের তেমন কোন অভাব নেই। স্ত্রী শিক্ষা ও কর্মসংস্থানের সুযোগের জন্য ঐসব দেশের মহিলারা স্বাবলম্বী ও যথেষ্ট স্বাধীনতা ভোগ করে থাকে। বলা বাহুল্য বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশে মুলতঃ শিক্ষার অভাব ও দারিদ্রের কারণে মহিলাদের দূর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে। এক শ্রেণীর লোভী ব্যক্তিরা যৌতুক নিয়ে ছেলেদের বিয়ে দেয় এটা অনস্বাীকার্য। তবে এক শ্রেণীর দরিদ্র লোকও রয়েছে যারা ছেলে বিবাহে যৌতুক নিয়ে স্বিয় অবস্থানের পরিবর্তন করতে চায়। তবে এই যৌতুকের জন্য এককভাবে বর পক্ষকে দায়ী করা চলবে না। কারণ কণ্যা পক্ষ থেকে যৌতুক দিয়ে সম্মত না হলে কখনও বর পক্ষ যৌতুকের দাবী করতে পারত না। অবশ্য এক শ্রেণীর কণ্যার পিতা বরদের লোভী পিতাদের মতো যৌতুক দিয়ে প্রত্যাশা অনুযায়ী কোন কোন ছেলেকে মেয়ের জামাই করে। তবে এটাও ঠিক যে কোন কোন কণ্যার পিতা বিবাহযোগ্য কণ্যাদের আইবুড়ো হওয়ার হাত থেকে কেউবা কণ্যা দায় থেকে মুক্ত হবার জন্য যৌতুক দিয়া কণ্যার বিয়ে দেয়। আমাদের দেশে উল্লেখযোগ্য দুই কারণে ছাড়াছাড়ি বেশী হয়। প্রথমত যৌতুক দ্বিতীয়ত বাল্য বিবাহ। আমাদের সমাজে কিছু কিছু স্বামী রয়েছে যাহারা নিজের সহায় সম্বল বিভিন্ন কারণে হারিয়ে দিয়ে চলতে না পেরে স্ত্রীর উপর যৌতুক আনার জন্য চাপ সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন প্রকার নির্যাতন চালায়। কণ্যার পিতা যদি অর্থ সম্পদশালী হয় তাহলে যৌতুকের দাবী মেটাতে পারে। আর কণ্যার পিতা যদি অর্থ সম্পদহীন হয় তবে যৌতুকের দাবী মেটাতে পারেনা। ফলে নানা রকম নির্যাতন সইতে সইতে এক মসময় তালাকপ্রাপ্ত হয় তখন ঐসব কণ্যার পিতার দায়গ্রস্থ হয়ে পড়ে। আবার বাল্য বিবাহের কারণে অনেক মহিলারা স্বামী পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে। কিছু পিতা আছেন যারা ছেলে মেয়ে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার আগেই বিয়ে দেয়। এই বাল্য বিবাহের কারণে অনেক পরিবারে পারিবারিক অশান্তি বিরাজ করতে থাকে। কোন কোন পর্যায়ে এইসব অপ্রাপ্ত মহিলারা স্বামী পরিত্যাক্ত হয়ে পড়ে এবং পিতার দায়গ্রস্খ হয়ে পরে। আবার কখনো এইসব মহিলারা কাজর বিনিময়ে খাদ্যের কাজ করিয়া কখনো জমিতে কৃষি কাজ করিয়া আবার কখনো অন্য কায়দায় পেটের অন্ন যোগায়।এখনো আরও উল্লেখযোগ্য যে অধিকাংশ স্বামী পরিত্যাক্ত মহিলারা ২টি ৩টি সন্তান নিয়ে বাবার বাড়ি পৌছে। এসব মহিলাদের সমস্যা ও কষ্ট এজন্য বেশী। বলাবাহুল্য বাংলাদেশের সকল জেলার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি প্রায় এক এবং দারিদ্যের কারণে সকল জেলার সনাধারণ মানুষের পর্যদস্ত। এই পটভ’মিতে বিচার করলে আলাদা ভাবে কোন জেলার এ সমস্যার সমাধান সম্ভব নয়। এ সমস্যার সমাধান করতে হলে প্রয়োজন স্থায়ী কর্মসংস্থনের। আমাদের দেশে কুটির শিল্প শাকসবজির বাগানসহ যে সমস্ত কর্মসংস্থান চালু রয়েছে যা উপার্জনশীল তাতে এই সব দুর্দশাগ্রস্থ দুস্থ মহিলাদের নিয়োগ করা হলে এই স্বামী পরিত্যাক্ত মহিলা ও তাদের সন্তান নিয়ে স্বাভবিক জীবন যাপন করতে পারবে। এর জন্য প্রয়োজন সংগঠন।