চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের বেহাল অবস্থা রোগীরা অতিষ্ট ॥ডাক্তার সংকট

p-k-3মোঃ জাবেদ হোসেন: চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে অতিমাত্রায় নোংরা পরিবেশের কারণে রোগীর সাথে আগত অভিভাবক ও রোগীরা অসুস্থ্য হয়ে পরেছে। হাসপাতালের নিচতলা অতিপ্রয়োজনীয় জরুরি বিভাগ, গাইনী ওয়ার্ড, ২য় তলার পুরুষ ওয়ার্ড, ৩য় তলার পেইং ও কেবিন ব্লক, শিশু ওয়ার্ড এবং ৪র্থ তলার মহিলা ওয়ার্ডের প্রতিটি ক্ষেত্রে রোগীরা মানবেতরভাবে দায়বদ্ধভাবে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে।সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি ফ্লোরের টয়লেটের দরজা ভাঙ্গা, পয়নিস্কাশনের জন্য তেমন ব্যবস্থা নেই। বাথরুমে প্রবেশের পথেই জমে রয়েছে অনেক ময়লা পানি। এছাড়া ভেসিন বলতে যা আছে সে স্থানটিকে ভাসমান ডাস্টবিন বানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এতে করে একদিকে পঁচা দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে।অন্যদিকে হাসপাতালের প্রতিটি ফ্লোরে উড়ে বেড়াচ্ছে জীবানুবাহী মশা-মাছি। তারপরেও বেঁচে থাকার তাগিদে এবং আর্থিক অভাব অনটনের কারণে সাধারণ মানুষ এসব নোংরা অসহনীয় পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু এতে করে রোগীরা যে এক রোগের পাশাপাশি আরেকটি নতুন রোগের মুখে পতিত হচ্ছে সেদিকে কারো খেয়াল নেই।এরপর দেখা যায়, রোগীদেরকে দেয়া হচ্ছে অত্যন্ত নি¤œমানের খাবার। যারা খাবার পরিবেশন করছেন তাদের সারা শরীরেও নেই পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বা হাতে গ্লাবস্। তাদের জিজ্ঞেস করলাম নামকাওয়াস্তে এক টুকরো পাঙ্গাস মাছ দিয়ে কি রোগীর ভাত খাওয়া হবে? জবাবে বললো, এসব বিষয়ে কন্ট্রার্ক্টারা জানে। এ সময় অনেক রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রতিদিন কোন রকম ছোট একটুকরো পাঙ্গাস দিচ্ছে। আর সকালে একটি নি¤œমানের রুটি ও একটি ছোট কলা, ডিম এ দিয়েই চালিয়ে দিচ্ছে। একটি সূত্র থেকে জানা যায় খাবার বিতরণকারী কন্ট্রাক্টরের প্রতিনিধিরা যে পরিমান খাবার বিতরণ করছে তার চাইতে অনেক বেশি তালিকাবদ্ধ করে। এতে করে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে সরকারি অর্থ। নি¤œœমানের এসব খাবার খেয়ে অনেক রোগী অসুস্থ্য হয়ে পরেছে বলেও অভিযোগ পাওয়া যায়। এছাড়াও হাসপাতালের প্রতিটি ফ্লোরে দেখা যায় রোগীদেরকে পর্যাপ্ত বিছানা দিতে না পারায় রোগীরা নিচে মেট বিছিয়ে শুয়ে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালের প্রতিটি ফ্লোরেই বেশ কয়েকটি কক্ষ নিজেদের খামখেয়ালীভাবে পুরানো আবর্জনা স্তুপ করে ফেলে রাখা হয়েছে। এসব কক্ষগুলোতে কর্তৃপক্ষ চাইলে সঠিক পরিকল্পনা করে রোগীদের জন্য আরো অনেকগুলো বিছানা ব্যবস্থা করতে পারে।অনেক রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এসব বিষয়ে হাসপাতালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের আন্তরিক মনিটরিং প্রয়োজন। রোগীদের সেবা নিয়ে তাদের তেমন কোন আগ্রহ নেই।হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কয়েকজন জানান, এ হাসপাতালে ইদানীং এতো বেশি মাত্রায় রোগীদের আগমন ঘটছে তাতে করে মানসম্মত সেবা দিতে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছে সেবাপ্রদানকারীরা। রোগীদের চিকিৎসা সেবার জন্য পর্যাপ্ত পরিমান চিকিৎসকেরও অভাব রয়েছে।তবে জেলাবাসীর প্রত্যাশা হাসপাতালের এসব অনিয়ম ও পরিবেশগত ত্রুটিকে অবশ্যই কর্তৃপক্ষ আমলে নিবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *