খুলনার এরশাদ শিকদারের স্বর্ণ কমলের মত সৈয়দপুরে আকাশপানে রৌপ্য কমল
মোতালেব হোসেন : সৈয়দপুর শহরে চোখ জুড়ানো খুলনার এরশাদ শিকদারের ন্যায় স্বর্ণ কমল না হোক রৌপ্য কমল বাড়ীর ছবি। উক্ত বাড়ীটিকে ঘিরে তদন্ত করলে বেরিয়ে আসবে স্বর্ণ কমলের মত অনেক ইতিহাস। পত্রিকায় বাড়ীর মালিকের নাম না থাকলেও শহর ঘুরে দেখা যায় যে, বাড়ীটি বাঁশ বাড়ীতে অবস্থিত। বাড়ীটি একজন রেল ওয়ার্কশপ খালাসীর। যার টিকিট নম্বর ৬০১৬। বর্তমানে তিনি মিস্ত্রী মিল রাইট শপের। উক্ত খালাসীর নাম মোকছেদুল মোমিন। বর্তমানে তিনি প্রমোশন পেয়ে মিস্ত্রী। প্রথম জীবনের শুরুতে রেল কারখানায় ডে লেবার হিসেবে কাজ করেছেন। পরবর্তীতে ১লা ডিসেম্বর ১৯৭৭ সালে খালাসী পদে নিয়োগ পান। এখন তিনি মিস্ত্রী পদে আছেন। উক্ত বাড়ীটি তার। উক্ত শ্রমিকের দাপটে সৈয়দপুর রেল ওয়ার্কশপের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকেন আতঙ্কে। এরশাদ শিকদারের যেমন ছিল ১২ নম্বর জেটি ঘাট তেমনি এনার আছে ওয়ার্কশপের ১২ নম্বর গেট। ১ নম্বর মেইন গেট স্টোর গেট ও ব্রীজ গেট। এই সকল গেট এনার নিয়ন্ত্রনে। এই সকল গেট দিয়ে দিনে রাতে মূল্যবান লোহা, তামা, পিতল, রং সহ অবৈধ মালামাল বের হয় তার নির্দেশে। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় এলে উক্ত শ্রমিক হয়ে উঠেন বেপরোয়া। সৈয়দপুর ওয়ার্কশপ রিমডেলিং এর শতকোটি টাকার কাজ শুরু সৈয়দপুর-চিলাহটী রেল লাইন সংস্কারের কাজ একই সঙ্গে শুরু হলে ওয়ার্কশপের ভিতরের যত পুরাতন টিন, স্ক্রাপ লোহা পরিবর্তন করা হয় তাহা তিনি স্টোর গেট, মেইন গেট দিয়ে ট্রাকে ট্রাকে করে মাল তার বাড়ীতে নিয়ে যায়। সৈয়দপুর ষ্টেশন স্টক ইয়ার্ডে রেল লাইন, ষ্টীল স্লিপার, ডিওব্লক এনকে টাইপ রড সহ কোটি কোটি টাকার মালামাল তার শ্রমিক লীগ অফিসের পিছন থেকে পিকআপ, ট্রাকে চুরি করে হাতিয়ে নেন প্রায় ২০ কোটি টাকার মত। এইসব এলাকায় কোন সাংবাদিক ছবি তুলতে গেলে বা ঘোরাঘুরি করলে তার ক্যাডার বাহিনী দিয়ে তাকে লাঞ্চিত করা হয় কিংবা ক্যামেরা ছিনিয়ে নেয়া হয়। এ কারনে তিনি স্থানীয় জিআরপি, বেঙ্গল পুলিশের ওসি দেরকে রাখে তার নিয়ন্ত্রনে। পুলিশ সহ স্থানীয় সকল নেতাকে তার পকেটে রাখেন। তাছাড়া রেলের ফাঁকা জায়গা দখল ও বিক্রী, কোয়ার্টার দখল ও বিক্রী, নীলসাগর ট্রেনের টিকিট কালোবাজারী, ওয়ার্কশপে মাষ্টারোলে লোক নিয়োগ বাণিজ্য ডিএস অফিসে কোটি কোটি টাকার টেন্ডারবাজী ডিইও অফিসের টেন্ডারবাজী সহ রেলের জায়গায় অবৈধ নিজস্ব মার্কেট নির্মাণ, ওয়ার্কশপ কেপিআই জায়গা দখল করে পিতার নামে অবৈধ স্কুল নির্মাণ। গোপন সূত্রে শোনা যায় ওয়ার্কশপ মেইন গেটের সামনে একটি দ্বিতল বাসায় বসবাসরত রেল কর্মচারীর স্ত্রীকে উক্ত নেতার নিয়ন্ত্রিত এলাকায় দিনে দুপুরে হত্যা। বাসাটি রেলের অঊঘ কে বুঝিয়ে না দিয়ে বাসাটি কার নিয়ন্ত্রনে? স্থানীয় পৌর আওয়ামীলীগ সহ যুবলীগ ছাত্রলীগ নেতারা তাকে হুজুর হুজুর করে চলেন। কারন উক্ত শ্রমিক নেতা অখুশি হলে স্থানীয় মন্ত্রী-এমপি ও তার চাচা পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতিকে দিয়ে অবৈধ উপায়ে তার পদ বাতিল করে দিবে। সৈয়দপুরের স্থানীয় একজন প্রকৌশলী জানান যে, বাড়ীটি তৈরীতে খরচ হয়েছে আনুমানিক ৭ কোটি টাকার মত। অথচ তার ইনকাম ট্যাক্স অফিসে জানা যায় ওনার টিআইএন ৪৬৬-১০৪-৩৮২৩ হিসাবে দেখা যায় ২০১১ সালে ওনার সম্পদ ছিল ১০ শতক জমির উপর টিন সেড বাড়ী। কয়া মৌজায় ৪ একর আবাদী জমি, রেল বাজারে দুটি দোকান, একটি মটর সাইকেল, দশ ভরি স্বর্ণ সহ কিছু ইলেকট্রিক সামগ্রী। ক্যাশ বহির্ভূত আমানত ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বাড়ীটি তৈরী শেষ করেন ২০১০ সালে। ফলে ১৮/০৮/২০১৩ তারিখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড উক্ত করদাতা শ্রমিকের ফাইলটি অডিট আপত্তিতে পরে। ০৯/২০১৩ তারিখের মধ্যে বাড়ীসহ অবৈধ সম্পদের ব্যাখ্যা দাবী করেন। যতদুর জানা যায় এখনো ব্যাখ্যা না দিয়ে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টায় ব্যস্ত। রেলমন্ত্রী সৈয়দপুরে এলে মন্ত্রীকে দুর্নীতির ব্যাপারে যেন কেউ বলতে না পারে সেজন্য স্থানীয় সাংবাদিকসহ সকল নেতাকে তিনি পকেটে রাখেন। তার পরেও রেলমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দায়িত্ব থাকাকালীন সময়ে সৈয়দপুরে এলে উক্ত মন্ত্রীকে ছাত্রলীগ সাবেক সভাপতি মন্ত্রীর সামনে রেলওয়ের উক্ত শ্রমিকের দুর্নীতির কথা বললে তাকে উক্ত শ্রমিক দলবল নিয়ে তাকে লাঞ্চিত করেন মন্ত্রীর সামনেই। এরফলে ভয়ে আর কেউ মুখ খোলেন নি। উক্ত শ্রমিকের সর্বসাকুল্যে বেতন ১৬ হাজার টাকার মত। অথচ ৭ কোটি টাকার বাড়ী, ২৬ লক্ষ টাকার মাইক্রো, ডিসকভার মটর সাইকেল, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়ের মেডিকেলে পড়ালেখা, ছেলেকে ক্যান্ট পাবলিকে পড়ানো সহ বিলাসী জীবনযাপন করেন সেই শ্রমিক। এ যেন এরশাদ শিকদারকেও হার মানিয়েছে।