পাশবিক নির্যাতনে ব্যার্থ হয়ে কিশোরীর উপর অমানুষিক নির্যাতন
পল্লীকবি জসিমউদ্দিনের আসমানি না হলেও তার চেয়ে কমও নয়। নবম শ্রেণীর ছাত্রী আসমানী হরিনাকুন্ডু থানার শেখপাড়া বিন্নি গ্রামের অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান। মা ও ছোট ভায়ের সাথে কোন রকম জীবন ধারন করছে তারা। মায়ের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের বিনিময়ে নবম শ্রেনীতে পড়ার সুযোগ পেয়েছে। ছোট থাকতেই বাবাকে হারিয়েছে তবুও লেখাপড়া থামেনি। মায়ের আশা আসমানি লেখাপড়া শিখে পরিবারের অভাব অনটন দূর করবে। সবকিছু ঠিকঠাক ভালই চলছিল, হঠাৎ বজ্রাঘাত যেন সব কিছু এলামেলো করে দিলো আসমানীর। গত ৪/৫ দিন আগে একই গ্রামের লম্পট সিরাজুল ও মিল্টন গভীর রাতে দরজা ভেঙ্গে আসমানির পাশবিক নির্যাতনের জন্য ঘরে প্রবেশ করে। আসমানি ও তার মায়ের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে এলে তার উপর লম্পট সিরাজুল চাপিয়ে দেয় অপবাদ। আসমানীর ঘরে নাকি অন্য কোন পুরুষ ছিলো। এই অপরাধে তার উপর চালানো হয় অমানুষিক শারীরীক নির্যাতন। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করার তিন ঘন্টা পর জ্ঞান ফেরে। এখন আসমানী ঠিকমত কথা বলতে পারছেনা, খেতেও পারছে না। ঘুমের মধ্যে কেঁপে উঠছে ভয়ে ও আতঙ্কে। এদিকে আসমানির মা রোকেয়া বেগম হরিনাকুন্ডু থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে পেয়ে পুলিশ বিন্নি গ্রামে তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেলেও এখনো মামলা রেকর্ড হয়নি। লম্পট সিরাজুল মামলা করলে বাড়ীঘর পুড়িয়ে ছাই করে দেবে বলে হুমকি দিয়েছে। ফলে নিরাপত্তা হীনতায় চোখে-মুখে হতাশা নিয়ে আসমানির মা রোকেয়া বেগম তার পরিবার বাড়ি ফিরতে পারছেন না। এ বিষয়ে হরিণাকুন্ডু থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আসামানীদের প্রতিবেশি সিরাজুল ইসলাম বেশ কিছুদিন ধরেই তাকে উত্যক্ত করছিল। তিনি আরো জানান, গত ৩/৪ দিন আগে আসমানীর ঘরে প্রবেশ করার সময় সিরাজুল ধরা পড়ে। বিষয়টি গ্রামে জানাজানি হয়ে গেলে সিরাজুল ও তার লোকজন আসমানীকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে চরম ভাবে নির্যাতন করে। এএসআই আসাদুজ্জামান বলেন, এ বিষয়ে একটি মামলা রেকর্ড হবে।