আইলা দিবসের ৬ বছর শেষে কয়রা’য় লক্ষণীয় উন্নয়ন না ঘটলেও আইলা ছিল জনপ্রতিনিধিদের জন্য আশির্বাদ
কয়রা থেকে আশরাফ : আজ ২৫ মে আইলা দিবসের ৬ বছর শেষে ৭ বছরের আগমন ঘটেছে। ২০০৯ সালের এই দিনে সামদ্রিক ঘূর্নিঝড় আইলার আঘাতে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের কয়েকটি উপজেলা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এরমধ্যে খুলনার কয়রা উপজেলার ৭ ইউনিয়নের ৬টি দুপুর ১২ টা থেকে বিকেল ৩ টার মধ্যে লবন পানিতে তলিয়ে যায়। সেদিন পানিতে ভেসে এবং দেওয়াল চাপাপরে মারা যায় ৪১টি তারা প্রাণ, এরমধ্যে শিশু ও বৃদ্ধের সংখ্যা বেশি ছিল। সূত্র মতে ২ ঘন্টার মধ্যে শত কিলোমিটার ওয়াপদার ভেঁড়ী বাঁধের ৪৯ টি স্থানে সামদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে ৬ ভেঙ্গে ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। তবে ভরা দুপুরে এমনটি ঘটাই ৮১ গ্রামের মানুষ ভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সাইক্লোন সেল্টার সহ ওয়াপদার ভেঁড়ী বাঁধে আশ্রয় নেয়। কিন্তু সেদিনের সেই দৃশ্য অর্থাৎ চারিদিকে মানুষের চিৎকার, আর শিশু ও বৃদ্ধ মা-বাবাকে ঘাড়ে নিয়ে পানির প্রবল স্রোতের ভিতর দিয়ে, আশ্রয় কেন্দ্রে ছুটে চলার করুন চিত্রগুলি আজ অনেকটা কল্পনার মত বর্ননা করেছে অনেকে। তবে আইলার ক্ষতির চিহ্ন উপজেলার ৪০/৪৫ টি গ্রামে আজও দেখা যায়। তাই আইলা দিবসে ৬ বছর পূর্তিতে অনেকেই স্মৃতি চারণ করে বলেন আইলা পরবর্তী কয়রার রাস্তাঘাট সহ ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের উন্নয়ন না ঘটলেও আইলা আশির্বাদ বয়ে এনেছেন জন প্রতিনিধিদের জন্য। এদিকে আইলায় ৪৯ টি স্থানে ভেঁড়ী বাঁধ ভেঙ্গেছিল তার মধ্যে পবনা, হারেজখালী, পদ্মপুকুর, পাথরখালী, শিকারীবাড়ী, গাতিরঘেরী ও আংটিহারা। এরমধ্যে ২ বছর পর নির্মান করা হয় পবনা, পাথরখালী, পদ্মপুকুর ও শিকারীবাড়ী এবং ৩ বছর পর হারেজ খালীর বাঁধ নির্মান করা হয়। সূত্র জানায় এসব বাঁধের জোয়ার ভাটার স্রোতে কয়রা সদরের ৪নং কয়রার দেওয়ানখালী খাল, মঠবাড়ীর প্রতাপস্মরনী ও দক্ষিণ বেদকাশী হলুদবুনিয়াতে পিচ ঢালাই ও পাকা রাস্তা ভেঙ্গে ৭০/৮০ ফুট গভীর হয়ে শাখা নদীতে পরিনত হয় এবং এখানে খেয়া নৌকায় শুরু হয় মানুষের পারাপার। অথচ আইলার ৬ বছর শেষে প্রতাপস্মরনী হাইস্কুল ও দক্ষিণ মঠবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপর দিয়ে তৈরি হওয়া আরশাদখালী আজও বাঁধ নির্মান করা হয়নি। স্থানীয় মেম্বর উজামিল জানান তার গ্রামের মধ্য দিয়ে দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ন এবং আরশাদ গাজীর জমি ভেঙ্গে শাখা নদী শাকবাড়ীয়া নদীর সাথে মিশে যায়। তিনি বলেন, প্রতিদিন কয়েকশত স্কুলগামী ছেলে মেয়েরা এবং সাধারণ মানুষ খেয়া নৌকায় পার হয়ে হাইস্কুল, প্রাইমকারী ও উত্তরচর কামিল মাদরাসায় আশা যাওয়া করে। অন্যদিকে ৪নং কয়রার দেওয়ানখালী ও বেদকাশীর হলুদবুনিয়ার খেয়াপারাপার বন্দ হয়েছে আইলার ০৫ বছর পর। এদিকে ২৫ মে আইলা দিবস নিয়ে কথা হয় ৪নং কয়রা গ্রামের জিয়াদ সরদার, মঠবাড়ীর গফফার গাজী, মহারাজপুরের নওশের গাজী, বেদকাশীর জাফর মোড়ল ও আঃ সবুর সহ অর্ধ শতাধিক সাধারণ মানুষের সাথে। তাদের অভিযোগ আইলায় কয়রাতে যে ক্ষতি হয়েছে সাধারণ মানুসের তা পূরণ হতে সময় লাগবে ২০ বছর। কেননা রাস্তাঘাট সহ ভেঁড়ী বাঁধের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। এসব ব্যক্তিরা আরও জানন আইলায় উপজেলার চেয়ারম্যান মেম্বরদের জন্য বয়ে এনেছে আশির্বাদ কারণ হিসাবে অনেকেই জানান, জনৈক ইউ.পি চেয়ারম্যান কিছুদিন আগে কয়রা সদরে ৫০ লক্ষ টাকায় ১২ কাঠা জমির উপর নির্মিত তিন তলা ভবন (সাবেক কৃষি ব্যাংক), খুলনা শহরে জিরো পয়েন্টে ২০ লক্ষ টাকার জমি সহ বাড়ীতে দুইতলা ভবন নির্মান ও বতুল বাজারে ১০ বিঘা জমি ক্রয় করেছে। এছাড়া একাধিক চেয়ারম্যান মেম্বর এখন আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ।