মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানিতে হচ্ছেটা কী?

mmiiu78ঢাকা: মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ঋণপত্র (এলসি) খোলার হার বৃদ্ধি ইতিবাচক হলেও তা আমদানির আড়ালে টাকা পাচার এবং যন্ত্রপাতির বদলে অন্য পণ্য আনা হচ্ছে এমন সন্দেহ করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এজন্য নিয়ন্ত্রক এ সংস্থাটি বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেনে সংশ্লিষ্ট সব ব্যাংকগুলোকে চিঠি দিয়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির প্রকৃত তথ্য জানাতে বলেছে।

সম্প্রতি এই তথ্য জানতে চেয়ে বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী সব ব্যাংকের কাছে ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির তথ্য চেয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চিঠিতে ওই সময়ে বিদেশ থেকে কোনো ব্যাংকের মাধ্যমে কত ঋণ নেয়া হয়েছে, ঋণগ্রহীতা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান, ঋণ নেয়ার কারণ এবং তার সঠিক ব্যবহার হয়েছে কি না- এসব বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে।

তথ্য দেয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে ২৯ মে পর্যন্ত সময় দেয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে সেই অর্থে মূলধনী যন্ত্রপাতি বা শিল্পের কাঁচামাল আমদানি করা হচ্ছে না বলে প্রমাণ পেয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এক্ষেত্রে তারা মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির কথা বলে অন্য পণ্যও আমদানি করছে। আবার কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে দেশীয় ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ করছে।

এসব কারণেই বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর কাছে এ ধরনের তথ্য চেয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক ম. মাহফুজুর রহমান  বলেন, ‘আমরা বিষয়টি জানতে চাই যে বিদেশ থেকে নেয়া ঋণ সঠিকভাবে ব্যবহার হচ্ছে কি না। আর যারা মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করছে তা সত্যিই তা করছে কি না। এজন্যই তাদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে।’

উল্লেখ্য, জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে দেশের ব্যাংকগুলোতে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ২৯৩ কোটি ডলারের এলসি খোলা হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ বেশি। এই সময়ে এলসি নিষ্পত্তির পরিমাণও ২৩ শতাংশ বেড়েছে।

প্রচলিত আইনে একজন উদ্যোক্তা তার কারখানার জন্য মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির এলসি খুললে তার নথি কেন্দ্রীয় ব্যাংকে যায়। তারপর সেই পণ্য চলে আসার পর এলসি নিষ্পত্তি হলে সেই নথিও কেন্দ্রীয় ব্যাংক পায়।

কিন্তু এসব তথ্য শুধু কাগজে কলমে পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বাস্তবে কোন পণ্য এলো, বা আদৌ কোনো পণ্য এলো কি না, তা জানার সুযোগ থাকে না।

কনটেইনারে সঠিক পণ্য এল কি না এবং শুল্ক সঠিকভাবে পরিশোধ হলো কি না, তা দেখার দায়িত্ব শুল্ক কর্তৃপক্ষের। কিন্তু তারাও বিষয়টি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে কাগজে কলমে, অর্থাৎ নথি আকারেই জানায়।

ফলে এলসির মাধ্যমে পণ্য আমদানির এই পুরো প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অনেকগুলো সুযোগ থেকে যায়। হলমার্ক কেলেঙ্কারি যার একটি বড় দৃষ্টান্ত। এ সুযোগ নিয়ে হঠাৎ মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি বেড়ে গেল কি না, কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা-ই খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *