৩৫ নং রায়গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জন
কাজী আশরাফ,লোহাগড়া(নড়াইল) প্রতিনিধি : লোহাগড়া উপজেলার নোয়াগ্রাম ইউনিয়নের ৩৫ নং রায়গ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মূল ভবন ধসের আশঙ্কায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে আতঙ্কের মধ্যে ক্লাস করেন এ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। সরেজমিনে দেখা গেছে, এ বিদ্যালয়ে একটি মাত্র টিনসেড ও দু’কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবন আছে। টিনসেডের বারান্দার ৬টি পিলারের পলেস্তারা ধসে রড বেরিয়ে গেছে। প্রতিটি কক্ষের দেয়ালের ইট খসে পড়েছে। বারান্দার পিলার ভেঙ্গে পড়েছে ও দেয়ালে ফাটল ধরেছে। এর মধ্যেই ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। এদিকে বেঞ্চ আছে মাত্র ২৬ জোড়া। এক বেঞ্চে দু’জন বসা যায়। এর অধিকাংশই ব্যবহার অনুপোযোগী। শিক্ষার্থীর তুলনায় বেঞ্চ কম থাকায় গাদাগাদি করে ও মেঝেতে বসে ক্লাস করে শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়টি সমাপনী পরীক্ষার কেন্দ্র হওয়ায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা চরম ঝুঁকির মধ্যে আছে। বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯০১ সালে ৭৯ শতাংশ জমির ওপর এ বিদ্যালয়টি গড়ে ওঠে। বর্তমান শিক্ষক ৮ জন ও শিক্ষার্থী ৩৫০ জন। ১৯৮৭-৮৮ সালে টিনসেড নির্মিত হয়। ভবনে খুব নিম্নমানের কাজ হওয়ায় তখনই স্কুল কর্তৃপক্ষ এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। সহকারি শিক্ষক উজ্জল রায় ও অনিমেষ বিশ্বাস জানান, প্রায়ই ক্লাস চলাকালে পিলারের পলেস্তারা খসে পড়ছে। বৃষ্টি হলে টিন চুইয়ে পানি পড়ে। এখন বারান্দার পিলারে ফাটল ধরায় সবাই আতঙ্কে আছে। ফলে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ নষ্ট হচ্ছে। পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে।
পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী স্বপ্নীল রায়, তন্দ্রা মালাকার, হামীম শেখ জানায়, ক্লাসে বই ও স্যারের দিকের চেয়েও নজর বেশি থাকে ছাদের দিকে। পিলার ভেঙ্গে কখন শরীরের ওপর পড়ে। তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী সোহাগ বলে, ‘ভয় করে কন্যে যেন মাথার ওপর পিলার ভাঙ্গে পড়ে। অভিভাবক সঞ্জয় রায় জানান, এ অবস্থায় ছেলেমেয়েদের স্কুলে দিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয়। সহকারী প্রধান শিক্ষক শেখ মোহাম্মদ শওকত জানান, এ অবস্থায় ক্লাস নেওয়া বিপদজনক। বিষয়টি উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আজিজুর রহমান বলেন,এ বিদ্যালয়ে সমাপনী পরীক্ষায় শতভাগ শিক্ষার্থী পাশ ও প্রতি বছর বৃত্তি পাচ্ছে। তবে অভিভাবকদের অভিযোগ,কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে উদাসীন ।এসএসসি’র সহ সভাপতি নারায়ণ ঘোষ বলেন,এ অবস্থায় শ্রেণিকক্ষে ক্লাশ না নিয়ে খোলা আকাশের নিচে নেওয়ায় ভালো।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. লুৎফর রহমান বলেন, বিষয়টি শিক্ষা কমিটির রেজুলেশনসহ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে অবহিত করা হবে।