মিয়ানমারে কারাভোগ ১৪ বাংলাদেশি দেশে, এখনো আটক শতশত

atok-mayanmarকক্সবাজার: মিয়ানমারের কারাগারে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগের পর ১৪ জন বাংলাদেশিকে দেশে ফেরত পাঠিয়েছে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি)। তবে এখনো শতশত বাংলাদেশি নাগরিক মিয়ানমারের কারাগারে মুক্তির প্রহর গুনছেন বলে জানিয়েছেন ফিরে আসা বাংলাদেশিরা।

মঙ্গলবার সকালে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে মংডুস্থ ১ নং পয়েন্ট অব অ্যান্ট্রি অ্যান্ড অ্যাক্সিট এলাকায় বিজিবি-বিজিপি পর্যায়ে বৈঠক শেষে তাদের দেশে ফেরত আনা হয়।

দেশে ফেরাদের মধ্যে রয়েছে ১১ জন মালয়েশিয়াগামী যাত্রী, ২ জন জেলে ও ১ জন অবৈধভাবে অনুপ্রবেশকারী। বিভিন্ন সময় তাদের আটক হয়েছিল।

বৈঠকে বাংলাদেশের ১৭ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন টেকনাফ সদর বিওপির কোম্পানি কমান্ডার মো. জাকারিয়া ও মিয়ানমারের ১৪ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন জেলা অফিসার সহকারী পরিচালক ইউ থুন থুন।

ফেরত আসা বাংলাদেশিরা হলেন- কক্সবাজার জেলার মহেশখালী থানার দক্ষিণপাড়ার মৃত ছৈয়দ আহমদের ছেলে আবদুর রহিম (৩৪), উখিয়া উপজেলার দক্ষিন পালংখালী গ্রামের বশির আহমদের ছেলে জয়নাল উদ্দিন (৩৫), শফিকুর রহমানের ছেলে এবায়দুল্লাহ (৩৫), নুর হাশিমের ছেলে নুর কবির (২৯), টেকনাফ উপজেলার গোদারবিল গ্রামের আবদুল শুক্কুরের ছেলে নুরুল আমিন (৩৩), লেদা গ্রামের কালু মিয়ার ছেলে মো. ইউছুপ (৩২), নাজির পাড়া গ্রামের মৃত জাফর আলমের ছেলে ছৈয়দ আলম (২৯), ঢাকার দোহার মকছুদপুর গ্রামের আবুফুর ওরফে বাবুল খানের ছেলে রাজিব খান (৩৩), চট্টগ্রাম লোহাগাড়ার চরমবা ওয়াহিদের পাড়ার আবুল কাশেমের ছেলে মো. জসিম (৩০), সাতকানিয়া বাজালিয়া গ্রামের বক্কর আলীর ছেলে আবদুর রহিম প্রকাশ বদি (৩৫), মোঃ ফজল কবিরের ছেলে বাদশা মিয়া (৩৪), বান্দরবনের নাইক্ষছড়ির বাবলু খিয়াং গ্রামের ইউমং কো এর ছেলে ইউ ক্য মং (২৮), আলীকদম উপজেলার হাজী গোরামিয়া পাড়ার মো. জামালের ছেলে মোঃ আমিন (২৭) ও ধলু পাড়া গ্রামের জাফর আহমদের ছেলে মো. ইউনুছ (৩৩)।

এদিকে সকাল পৌনে ১২টায় সদর বিওপির মিলনায়তনে ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায় লে. কর্নেল মো. আবুজার আল জাহিদ সংবাদ সম্মেলনে জানান, মিয়ানমারের সঙ্গে অত্যন্ত সৌহার্দ্যপূর্ণ এবং আন্তরিক পরিবেশে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় মানব ও মাদকপাচারসহ সীমান্তে বিভিন্ন বিষয়ের উপর আলোচনা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, মিয়ানমারের কারাগারে বর্তমানে কতজন বাংলাদেশি নাগরিক আছে এবং সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ার সংখ্যা সম্পর্কে মিয়ানমার কোনো তথ্য সরবরাহ করেনি। তবে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

ফেরত আসা টেকনাফের লেদা গ্রামের মো. ইউছুফ  জানান, নাফনদীতে মাছ শিকারে গিয়ে তৎকালীন নাসাকার হাতে আটক হয়ে দীর্ঘ ৬ বছর ৫ মাস কারাভোগ করেছেন। তিনি বিজিবি প্রচেষ্টায় দেশে ফিরতে পারায় সন্তোষ্টি এবং বিজিবিকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি আরও জানান, তারমত আরও শতশত বাংলাদেশি নাগরিক মিয়ানমারের কারাগারে মুক্তির প্রহর গুনছেন। সে দেশের কারাগারে অমানুষিক যন্ত্রণা ভোগ করছে। বাংলাদেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযত যোগাযোগ এবং তৎপরতার অভাবে তারা দেশে ফিরতে পারছেনা বলে দাবি করেন।

তাছাড়া ফেরত আসা মালয়েশিয়াগামীযাত্রী পালংখালীর জয়নাল উদ্দিন জানান, ২০১২ সালের ২৫ জুন ৮০ জন মালয়েশীয়াগামীযাত্রী বোঝাই টেকনাফের কাটাবনিয়া ঘাট থেকে রওয়ানা দিয়ে মিয়ানমারের আইনশৃঙ্কলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছিল। ৩৬ মাস মাস কারাভোগের পর তাদের দলের ১১ জন ফেরত আসলেও বাকিদের ব্যাপারে তারা কিছুই জানে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *