সরে যাচ্ছে ভারতীয় ভূখণ্ড, দেশে বড় ভূমিকম্পের আশঙ্কা

indian-plate-1ভারত : ভূপৃষ্ঠের বিধ্বংসী প্রলয়ের পেছনে টেকটনিক প্লেটের অবস্থান পরিবর্তন জড়িত বলেই মনে করেন ভূবিজ্ঞানীরা। তাদের মতে, আজ থেকে ১১০ কোটি বছর পূর্বে পৃথিবীতে একটিমাত্র মহাদেশ ছিল যার নাম রোডিনিয়া। ৭৫ কোটি বছর পূর্বে এটি ভেঙে যায় এবং কিছু অংশ দক্ষিণ গোলার্ধে চলে আসে। মহাদেশগুলো টেকটোনিক প্লেটের উপর অবস্থিত যারা চলমান। এই গতিই রোডিনিয়ার ভগ্নাংশগুলোকে আবার একত্রিত করে প্রায় ৩০ কোটি বছর পূর্বে গঠন করেছিল প্যানজিয়া। তবে এটি পুরোপুরি গঠিত হয় আনুমানিক ২৭ কোটি বছর পূর্বে। ২০ কোটি বছর পূর্বে অবশ্য প্যানজিয়া ভেঙে উত্তরে লাউরেশিয়া ও দক্ষিণে গন্ডোয়ানা নামের দু’টি মহাদেশ গঠিত হয়।

১৮ কোটি বছর পূর্বে জুরাসিক যুগের শুরুর দিকেই গন্ডোয়ানার পূর্বাংশ আলাদা হয়ে যায়, যার অন্তর্ভুক্ত ছিল বর্তমান মাদাগাস্কার, ভারত, অস্ট্রেলিয়া ও অ্যান্টার্কটিকা। ১৩ কোটি বছর আগে পশ্চিম গন্ডোয়ানাও আবার দুই ভাগে ভাগ হয়ে যায়- পূর্বের অংশটি হয় আফ্রিকা আর পশ্চিমেরটি দক্ষিণ আমেরিকা। এরপর ৯ কোটি বছর পূর্বে মাদাগাস্কার থেকে সরে আসে ভারতীয় ভূখণ্ড। মাদাগাস্কারের বন্ধন থেকে মুক্তি পেয়ে ভারত নির্বিঘ্নে এশিয়ার দিকে এগোতে শুরু করে। এরপর ইউরেশিয়ান প্লেটে এসে সজোরে ধাক্কা মারে ভারতীয় উপমহাদেশ। তার কারণেই আমূল পরিবর্তন ঘটে এ অঞ্চলের ভূপ্রাকৃতিক চরিত্রে। যাতে সৃষ্টি হয় হিমালয় পর্বত।

যদিও এ তত্ত্ব নিয়ে রয়েছে নানা বিতর্ক। তবে বিতর্ক যাই হোক না কেন ভূবিজ্ঞানীরা আবারো বলছেন, ক্রমাগত প্লেটের অবস্থান পরিবর্তনের কারণে বড় ধরনের ভূমিকম্প অবধারিত। যা আঘাত হানতে পারে নেপাল, ভারত, বাংলাদেশে।

বিজ্ঞানীদের মতে, ভারতীয় ভূখণ্ড প্রতিনিয়তই ইউরেশিয়ান প্লেটকে ধাক্কা মারছে। যার ফলেই কিছুদিন পর পর কেঁপে উঠছে নেপাল, বাংলাদেশ, উত্তর ভারত এবং আশপাশের অঞ্চল।

নেদারল্যান্ডসের উৎরেখত বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ডাউয়ে জে জে ভ্যান হিন্সবার্গেন বলেন, ‘মানুষের আঙুলের নখ যে হারে বাড়ে সেভাবেই এখনো ইউরেশিয়ান প্লেটের মধ্যে সেই গতিতে প্রবেশ করছে ভারতীয় ভূখণ্ড। তবে সেটি সাধারণ মানুষের বোঝা সম্ভব নয়।’ যদিও বিষয়টি নিয়ে ভূ-বিজ্ঞানীরা বিশেষ চিন্তিত হলেও, কি কারণে এটি হচ্ছে তার ব্যাখ্যা দিতে পারেননি কেউ।

ভূবিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, ভারতীয় ভূখণ্ড প্রতিনিয়তই ইউরেশিয়ান প্লেটকে ধাক্কা মারছে, তাতে ভবিষ্যতে আরো বেশি ক্ষয়ক্ষতি হতে চলেছে এ এলাকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *