মংলা পৌরসভার আগামী নির্বাচনে বিএনপির দূর্গে আঘাত হানবে জামায়াত
মনির হোসেন, মংলা, বাগেরহাট : মংলা উপজেলা নির্বাচন সমঝোতার মাধ্যমে বিএনপি জামায়াত করলেও আসছে পৌর নির্বাচনে কোন প্রকার ছাড়া দিতে রাজি নয় জামায়াত। এমনটাই সাফ জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর মংলার শীর্ষ কয়েকজন নেতা। এ পৌরসভা বিএনপির দূর্গ হিসেবে পরিচিত থাকলেও জামায়াত পৌর নির্বাচনে সব পদে তাদের একক প্রার্থী দিবে। সম্প্রতি দলের রোকন বৈঠকে এমন সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জামায়াতের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছেন।
নির্বাচনের আরো কয়েক মাস বাকী থাকলেও তারা এ লক্ষ্যে এখন থেকে নিবাচর্নী কমিটি গঠন করে ফেলেছেন। তাদের প্রার্থীও প্রায় চুড়ান্ত। সম্প্রতি শেষ হওয়া উপজেলা নির্বাচনে বিএনপির মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী পরাজিত হলেও ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হন জামায়াতের মনোনিত প্রার্থী । এটাকেই অনুপ্রেরণা হিসেবে দেখছেন জামায়াত। তবে এই সিদ্ধাতে মংলার বিএনপি-জামায়াতের ঐক্যের কোনরুপ ফাটল ধরবে না জামায়াত এমনটা দাবী করলেও বিএনপি নেতাদেরমত উল্টো। তারা বলছেন আগামী সংসদ নির্বাচনে তারাও জামায়াতের প্রার্থীকে মেনে নেবেন না। ছাত্র শিবিরের সাবেক জেলা অর্থ সম্পাদক ও জামায়াতের পৌর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. আনিচুর রহমান মঙ্গলবার সকালে মুঠোফোনে জানান “গত শুক্রবার তাদের রোকন বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওই বৈঠকে আগামী পৌর নির্বাচনে জামায়াতের পক্ষ থেকে সব পদে একক প্রার্থী দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ”
তিনি আরো বলেন- “ ইতোমধ্যে পৌর নির্বাচন পরিচালনার জন্য ৩ সদস্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা মাঠ পর্যায়ে প্রার্থী যাছাই-বাছাই করতে নেমে পড়েছেন। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে মেয়র প্রার্থীসহ পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের জন্য যোগ্য কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ৩ জন মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থির নাম ঘোষণা করা হবে। এদিকে মংলা পৌরসভা বিএনপির দূর্গ হিসেবে পরিচিত থাকলেও জামায়াতের ভোট ব্যাংকটাও বিএনপির জন্য বড় ধরণের সাপোর্ট । জামায়াতের এ সিদ্ধান্ত মংলার বিএনপি-জামায়াতের ঐক্যের মধ্যে বড় ধরণের ফাটল ও ক্ষোভের সৃষ্টি হবে এমনটাই মনে করছেন বিএনপির নেতা কর্মীরা। মংলা পৌর যুবদলের সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর মো.এমরান হোসেন বলেন-“জামায়াতের বর্তমান মুভমেন্ট দেখে মনে হচ্ছে তারা আসন্ন পৌর নির্বাচনে বিএনপির সাথে সমাঝোতা করবে না। তবে এটা বিএনপি জামায়াত কারো জন্যই ভালো হবে না। যদি জামায়াত জোট ভেঙ্গে একক ভাবে পৌর নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে তাহলে সংসদ নির্বাচনে ঐক্যের সংকট তৈরি হবে। সুবিধা পাবেন বিপক্ষরা।”তবে জামায়াত সমর্থিত মংলা উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও জামায়াতের উপজেলা সহকারী সেক্রেটারী অধ্যাপক মো.কোহিনূর সরদার যুবদলের এ নেতার কথা মানতে নারাজ। তিনি বলেন- “জামায়াত পৌর নির্বাচন একক ভাবে করলে তাতে সংসদ নির্বাচনে জোটগত কোন প্রভাব পড়বে না।”
এদিকে আগামী পৌরসভার নির্বাচনে জামায়াতের মনোনিত মেয়র প্রার্থী হিসাবে ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এ্যাড. মো. হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে জোরেশোরে।
এ ব্যাপারে হোসেন বলেন- “দল থেকে যে সিদ্ধান্ত আসবে তাই মেনে নেব।”
সবশেষ ২০১১সালের ১৩ই জানুয়ারী মংলা পৌর সভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত মেয়র প্রার্থী জুলফিকার আলী নির্বাচিত হন। এছাড়া পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬টিই দখলে নেন বিএনপি, দুইটি দখলে নেন জামায়াত। সংরক্ষিত তিনটি মহিলা কাউন্সিলরে মধ্যে দুটিই দখলে নেন বিএনপি।