ফলোআপ : লোহাগড়ার আলোচিত ববিতা নির্যাতন মামলায় ববিতার স্বামী ও শ্বশুরসহ ৪ আসামীকে কারাগারে প্রেরণ

Lohagara Pic777777কাজী আশরাফ,লোহাগড়া(নড়াইল)প্রতিনিধি: নড়াইলের লোহাগড়ায় আলোচিত গৃহবধু ববিতা নির্যাতন মামলার প্রধান আসামী ববিতার স্বামী সেনা সদস্য শফিকুল শেখসহ গ্রেফতারকৃত চার আসামীকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত। গতকাল দুপুরে তাদেরকে নড়াইলের আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাদেরকে কারাগারে প্রেরণ করেছে।
সোমবার সন্ধ্যায় সিলেটের শাহপরান (র:) পুলিশ ফাড়ির এসআই আলমগীর ওই সেনাসদস্যকে আটক করে সিলেটের শাহপরান থানায় হস্তান্তর করে। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লোহাগড়া থানার এসআই নজরুলের নেতৃত্বে একদল পুলিশ শাহপরান থানা থেকে শফিকুলকে আটক করে লোহাগড়া থানায় নিয়ে আসে।
এছাড়া গত রাত দেড়টার দিকে ববিতার শ্বশুর সালাম শেখ, ভাসুর হাসান শেখ ও প্রতিবেশি নান্নু শেখকে গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী উপজেলার ভাটিয়াপাড়া থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতরা ঢাকায় পালিয়ে যাচ্ছিল বলে জানিয়েছেন পুলিশ সুপার সরদার রকিবুল ইসলাম।
ববিতার স্বামী শফিকুল শেখ দাবি করেন, সে ছুটিতে বাড়িতে আসলেও ঘটনার সময় মাদারীপুর মামা বাড়িতে ছিলেন।
এঘটনা তদন্তের জন্য নড়াইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ মেনহাজুল আলমকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এ ঘটনায় গত ৫ মে নির্যাতিতার মা খাদিজা বেগম বাদী হয়ে ৭ জনের নাম উল্লেখ করে লোহাগড়া থানায় নারী নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এজাহারভুক্ত ৫ আসামীসহ ঘটনার সাথে জড়িত মোট ৬জনকে গ্রেফতার করে।
রবিবার হাইকোর্ট অভিযুক্তদেরকে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়ার পর পুলিশ ও প্রশাসন আসামী আটক করতে অভিযানে নামে।
এদিকে রবিবার (১০ মে) বিকালে ববিতা পুলিশের সহযোগিতায় বাবার বাড়ি নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের এড়েন্দা গ্রামে ফিরলেও রাতে লোহাগড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মোকতার হোসেন তার নিরাপত্তা ও চিকিৎসার জন্য লোহাগড়া হাসপাতালে ভর্তি করেন।
গতকাল লোহাগড়া হাসপাতালে ববিতা বলেন,আমি গরীবের মেয়ে। আমার তো সবই শেষ। লেখাপড়া করে একটা চাকরীর চেষ্টা করবো।এখন আমি চাকরী করে নিজের পায়ে দাঁড়াতে চাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন, তিনি যেন আমার পাশে দাঁড়ান।
উল্লেখ্য, উপজেলার কাশিপুর ইউপির শালবরাত গ্রামের ছালাম শেখের ছেলে শফিকুল শেখের সাথে পার্শ্ববর্তী এড়েন্দা গ্রামের ইসমাইল মোল্যার মেয়ে ববিতার মোবাইলে প্রেমজ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর জের ধরে গত ২০১৩ সালের ২১ নভেম্বর গোপনে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের পর তাকে শ্বশুর বাড়ির ঘরে তুলে নেবে না বলে তালবাহানা শুরু করে। শফিকুলও ববিতার সাথে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।এক পর্যায়ে ববিতা ২৯ এপ্রিল শ্বশুর বাড়িতে যেয়ে অবস্থান করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ৩০ এপ্রিল সকাল ৭ টার দিকে ববিতার শাশুড়িসহ বাড়ির লোকজন তাকে গাছের সাথে বেঁধে বেধড়ক লাঠিপেটা করে। খবর পেয়ে লোহাগড়া থানা পুলিশ তাকে উদ্ধার করে। আহত ববিতাকে তার পরিবার নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। এ ঘটনায় ববিতার মা খাদিজা বেগম বাদি হয়ে ৭ জনকে আসামী করে ৫ মে লোহাগড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা করেন( মামলা নং-০৭)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *