ছুটি পাননি অন্তঃসত্ত্বা, টয়লেটেই সন্তান প্রসব

child3333গাজীপুর: কাজ করতে করতে অসুস্থ হয়ে পড়ায় ছুটি চেয়েছিলেন অন্তঃসত্ত্বা। কিন্তু পাননি। ছুটি চাইতে গেলে সুপারভাইজার তাকে বলেছিলেন কাজে মনোযোগ দিতে। কিন্তু প্রসববেদনা তীব্র হতে থাকলে ওই অন্তঃসত্ত্বা কারখানার ভেতরের একটি টয়লেটে গিয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়েন এবং সেখানেই প্রসব করেন ফুটফুটে এক নবজাতক। পরে ওই মাকে বাঁচানো গেলেও মৃত্যু হয় নবজাতকের।

ঘটনাটি ঘটেছে শনিবার দুপুরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার হরিণহাটি এলাকায় অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার কারখানায়।

ভুক্তভোগী ওই শ্রমিকের নাম হামিদা আক্তার। তিনি ওই কারখানার লাস্টিং সেকশনে কাজ করেন।

কারখানার শ্রমিক ও কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, কালিয়াকৈর উপজেলার ওই কারখানার লাস্টিং সেকশনে কাজ করেন নারী শ্রমিক হামিদা আক্তার। তিনি অন্তঃসত্ত্বা থাকায় শনিবার দুপুরে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তিনি কারখানার লাস্টিং সেকশনের সুপারভাইজার মো. রতন মিয়ার কাছে ছুটির আবেদন করেন। কিন্তু তাকে ছুটি না দিয়ে কাজে মনোযোগ দিতে বলেন ওই কর্মকর্তা। এতে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে তিনি কারখানার ভেতরের একটি টয়লেটে যান। সেখানে যাওয়ার পর তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন ও নবজাতক প্রসব করেন।

পরে তাকেসহ নবজাতককে উপজেলার সফিপুর মর্ডান হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নবজাতককে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে কারখানার পরিচালক আজিজুর রহমান বলেন, ‘২০০১৪ সানের ১৭ জুন ওই নারী শ্রমিকের প্রথম সন্তান হয়। এরপর মাতৃত্বকালীন ছুটি শেষে তিনি কারখানায় যোগদান করেন। গত শনিবার দুপুরে শরীর খারাপ লাগছে জানিয়ে কারখানার লাস্টিং সেকশনের সুপারভাইজার মো. রতন মিয়ার কাছে ছুটির আবেদন করেন। সুপারভাইজার তাকে কারখানার নিজস্ব মেডিকেল অফিসারের কাছে যাওয়ার কথা বললে তিনি ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করেন। এরপরেই তিনি বাথরুমে সন্তান প্রসব করেন।’

তার দাবি, ভুক্তভোগী হামিদা আক্তার তার সন্তান ধারণের ব্যাপারে সন্দিহান ছিলেন। তাই শরীর খারাপ লাগছে বলায় কারখানার নিয়মানুসারে সুপারভাইজার তাকে মেডিকেল অফিসারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেন। নবজাতকের মৃত্যু হলেও মা এখন সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন বলে জানান তিনি।

তবে ছুটি না দেয়ার বিষয়টি তদন্ত করে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান কারখানার পরিচালক আজিজুর রহমান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *