ভূকম্পনে বিদ্যালয়ের ভবনে ব্যাপক ফাটল : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে শিক্ষার্থীদের পাঠদান
মো : জাবেদ হোসেন, চাঁদপুর : পর পর কয়েক দফা ভূকম্পনে ষোলঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভবনটিতে ব্যাপক ফাটল দেখা দিয়েছে। ৩ তলা বিশিষ্ট ভবনের প্রায় প্রতিটি দেয়াল এবং ছাদে ছোট বড় অনেক ফাটলের কারণে সেখানে এখন জীবনের ঝুঁকি নিয়েই শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৯৭৪ সালে স্থাপিত ষোলঘর আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়টি ওয়াপদা থেকে স্থানান্তরিত করে সরকারি পরিত্যক্ত একটি কোয়ার্টারকে ঘষামাজা করে কোনোরকম ক্লাস করার উপযোগী করে তুলে সেখানে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা হয়। ১৯৬৫ সালে নির্মিত উক্ত ভবনটির (কোয়ার্টার) তখন থেকেই প্রতিটি ক্লাস রুমের দেয়াল, সিড়ি ও ছাদে ফাটল এবং প্লাস্টার উঠে যাওয়া ছিলো। পুনরায় ভবনটিতে কাজ করলেও সেখানে ছোট বড় কিছু ফাটল থেকে যায়। এছাড়া ৩ তলা ভবনের প্রত্যেক ক্লাসেই দরজা জানালা ছাড়া অপরিবেশে শিক্ষার্থীদের চলছে পাঠদান। অনেকটা নিরূপায় হয়েই পুরোনো ও জরাজীর্ণ ভবনটিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বিগত দিনে কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিয়ে আসছিলেন। গত ২৫ এপ্রিল দেশজুরেড় দু’দফায় ঘটে যাওয়া ভূ-কম্পনে পুরোনো এই ভবনটিতে ব্যাপক ফাটল দেখা দেয়। ভূ-কম্পনের ফলে ভবনের ছোট ছোট সেই ফাটল থেকে বড় ধরনের ফাটল দেখা দেয় এবং নতুন করেও ভবনের কয়েকটি স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে বিদ্যালয়ের ১ম শ্রেণী থেকে ১০ম শ্রেণীর প্রায় ৬৪০ জন শিক্ষার্থীর শিক্ষা কার্যক্রম। অপর দিকে জীবনের নিরাপত্তাহীনতার মুখেও অনেকটা বাধ্য হয়েই শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নঈম উদ্দিন খান বলেন, ৫০ বছরের পুরাতণ এই জরাজীর্ন ভবনটিতে আমরা ২০১১ সাল থেকে শিক্ষার্থীদের পাঠদান দিয়ে আসছি। এই ভবনের দেয়াল এবং ছাদে পূর্ব থেকেই ছোটবড় অনেক ফাটল ছিলো। কিন্তু গত ২৫ এপ্রিল দেশজুড়ে দু’দফায় ঘটে যাওয়া ভূ-কম্পনে ভবনে ব্যাপক ফাটল দেখা দেয়। প্রায় প্রতিটি শ্রেণী কক্ষের দেয়াল, পিলার বড় বড় ফাটল ধরেছে। এছাড়াও ভবনের ছাদের ফাটল স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এতে করে আমরা বেশ আতংঙ্কিতভাবে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কর্যাক্রম চালিয়ে যাচ্ছি। শিক্ষার্থীরা ভয়ে ঠিক মতো ক্লাস করছে না। শীঘ্রই ভবনটি পুনর্নির্মাণ না করলে যে কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই আমি এ ব্যাপারে চাঁদপুরের মাননীয় সংসদ সদস্য ডা. দীপু মনি, শিক্ষা অধিদপ্তরসহ সংস্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে একটি আবেদন করার প্রস্তুতি নিয়েছি। কর্তৃপক্ষের কাছে আমার অনুরোধ, ৬৮০জন শিক্ষার্থীর জীবন ও শিক্ষার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অতি দ্রুত পুরাতন এই ভবনটি ভেঙে নতুনভাবে নির্মাণ করা হোক।