লোহাগড়ায় ১৬টি দাবিতে কালনাঘাটে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ
কাজী আশরাফ, লোহাগড়া(নড়াইল) : কালনা সেতুর দ্রুত বাস্তবায়ন, সি,এস-আর ও এস.এ রেকর্ডমূলে জমির মালিকানা ফেরত, ৪৪ নং চরজাজিরা মৌজার অধিগ্রহণকৃত জমির ন্যায্য ক্ষতিপূরণ, বসতবাড়ি ও গাছপালার ক্ষতিপূরণ, ভূমিহীনদের পুনর্বাসন, নদী সিকস্তি প্রত্যাহার, খাজনা নেওয়ার আদেশ দেয়া, বি.আর.এস-মাঠ পরচা মোতাবেক জমির রেকর্ড প্রদানসহ ১৬টি দাবিতে বুধবার (২২ এপ্রিল) নড়াইল জেলার লোহাগড়া সীমান্তবর্তী কালনাঘাটে সহস্রাধিক মানুষ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচী পালন করেছে।
এলাকাবাসি ও ভূক্তভোগীদের আয়োজনে বেলা ১১টায় ঘন্টাব্যাপি এ কর্মসূচী পালিত হয়। মানববন্ধন শেষে লোহাগড়া ইউপি চেয়ারম্যান বদর খন্দকারের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন নড়াইল-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হাফিজুর রহমান, শিক্ষক মফিজুর রহমান, হেমায়েত হোসেন, শিমু বেগম, বেলায়েত হোসেন প্রমুখ।
ভূক্তভোগীরা জানান, মধুমতি নদীর কালনা পয়েন্টে কালনা সেতুর কাজ সম্প্রতি শুরু হয়েছে। ওই বাস্তবায়নাধীন সেতুর লাগা পশ্চিম পার্শ্বে সি.এস ও আর.এস রেকর্ডিং পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত ৪৪ নং চরজাজিরা কালনা মৌজার জমা-জমির ওপর বসবাস ও ভোগ দখল করছেন প্রায় শতাধিক পরিবার। খরস্রোতা মধুমতির স্রোতে নদী ভাঙ্গনে নদী পূর্বদিকে সরে যাওয়ায় ওই মৌজার জমি ভেঙ্গে নদী গর্ভে চলে যায়। ধীরে ধীরে বছরের পর বছর ওই মৌজার জমি পয়স্থি হওয়ায় সেখানে পুনরায় বসতবাড়ি নির্মাণ ও বসবাস শুরু হয়। ১৯৬২ সালের জরিপে ওই মৌজার সম্পত্তি আংশিক নদী সিকস্তি ও আংশিক নাল সম্পত্তি হিসাবে বসবাসকারিরা পরচা প্রাপ্ত হন। ২০০৪ সালে ওই মৌজার প্রিন্ট ম্যাপ ও পরচা প্রকাশের পূর্ব পর্যন্ত এ মৌজার সমস্ত সম্পত্তি রেজিষ্ট্রি দলিল, হস্তান্তর, ও রূপান্তরসহ সমূদয় কার্যক্রম চালু ছিল। কয়েক বছর পূর্ব থেকে সেসব কার্যক্রম থেকে বঞ্চিত এলাকাবাসি। বাস্তবানাধীন কালনা সেতু সংলগ্ন পশ্চিম প্রান্তের সংযোগ সড়কটি ৪৪নং চরজাজিরা কালনা মৌজার ৪৫ টি প্লটের ওপর দিয়ে যাচ্ছে। ওই প্লটের ওপর শতাধিক পরিবার বসবাস করছেন। সেতুর কাজ শুরুর পূর্বে সড়ক জরিপ বিভাগের মাধ্যমে ওই মৌজার জমি, ঘরবাড়ি হুকুম দখলের আওতায় না নিয়ে সরকারি খাস জমি হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ফলে ক্ষতিগ্রস্থরা তাদের ন্যায্য পাওনা বা ক্ষতিপূরণ পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
ভূক্তভোগী হোসনেআরা(৩৫), হাবিবুর(৭০), সিরাজ মোল্যা(৭০)সহ অন্যরা বলেন, সেতুর কারনে আমরা আজ নিজ বাড়ি, ঘর, ফসলের জমি ছেড়ে দিয়ে রাস্তায় বসেছি। আমাদের ন্যায্য পাওনা দিলে আমরা মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবো। সরকার আমাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করুক।
এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগের গোপালগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী সমীরন রায় সাংবাদিকদের ফোনে জানান, বিষয়টি ডি.সি অফিসের। গোপালগঞ্জের ডি.সি(জেলা প্রশাসক) মো: খলিলুর রহমান বলেন, আমরাতো সরকারি খাস খতিয়ানভূক্ত জমির ক্ষতিপূরণ দিতে পারিনা। ভূক্তভোগী ও এলাকাবাসি এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।