হিন্দুপল্লীতে হামলা-লুটপাট, প্রতিমা ভাঙচুর

Gazipur-20-ApeewwMMoগাজীপুর: গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকার বনগ্রামে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের অন্তত অর্ধশত বাড়িতে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। তাদের হামলায় রক্ষা পায়নি শিশু-নারীরাও। ভাঙচুর করা হয় কালী মন্দিরের বেশ কয়েকটি প্রতিমা। এ ঘটনার পর এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় আছেন ওই গ্রামের শতশত বাসিন্দা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, ঢাকা ময়মনসিংহ মহাসড়কের গাজীপুরের রাজেন্দ্রপুর এলাকার বনগ্রাম গ্রামের বেশির ভাগই হিন্দু ধর্মাবলম্বী নৃগোষ্ঠী। রোববার রাতে এ গ্রামেই হামলা চালায় পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রসী রফিক ও তার দলবল। এ সময় সন্ত্রাসীরা বাড়িতে বাড়িতে হানা দিয়ে তছনছ করে প্রতিটি ঘরের আসবাবপত্র। লুট করে স্বর্ণালঙ্কার, টাকা-পয়সাসহ বিভিন্ন মালামাল। সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হন নারী ও শিশুসহ অন্তত ৭ জন। হামলাকারীরা হিন্দুদের কালী মন্দিরে হামলা করে বেশ কয়েকটি প্রতিমা ভাঙচুর করে। হামলা চলাকালে সন্ত্রাসীদের ভয়ে শতশত পরিবার আশ্রয় নেয় পার্শ্ববর্তী বনজঙ্গলে। এ ঘটনায় এলাকায় বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। প্রশ্ন ওঠেছে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, শীর্ষ সন্ত্রাসী রফিক ও তার দলবলের অত্যাচার ও নানা অপরাধের প্রতিবাদ করায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করছে ভুক্তভোগীসহ স্থানীয়রা।
এ ব্যাপারে বনগ্রাম গ্রামের পিযুষ বর্মন জানান, মাস খানেক আগে শীর্ষ সন্ত্রাসী রফিকের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে এলাকাবাসী তাকে গ্রাম ছাড়া করে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি টেলিভিশন চ্যানেলে তার অপকর্ম নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এনিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে ওই সন্ত্রাসী ও তার দলের লোকজন হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছিল। এরই জেরে রোববার রাতে রফিকের নেতৃত্বে ৫০-৬০ জন লোক লাঠিসোটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় গ্রামবাসীর ওপর। এ সময় সন্ত্রাসীরা অন্তত ২০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। হামলাকারীরা নারী-পুরুষ যেখানে যাকে পেয়েছে তাকেই মারধর করতে থাকে। হামলায় কফিল, সুরেশ, রুমানাসহ অন্তত ৭ জন আহত হন।
একই গ্রামের সুনিল, সুকেন, মাজেদা খাতুন, বিমল, প্রহলাদ, লালমোহন, নিরঞ্জন, মঙ্গল, শ্যামলের বাড়িসহ অন্তত ৫০টি বাড়িতে হামলা করে ঘরের আসবাবপত্র, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ভাঙচুর করে সন্ত্রাসীরা। লুট করা হয় নগদ টাকাসহ বিভিন্ন স্বর্ণালঙ্কার।
নিরঞ্জন ও সুধীরের বাড়িতে হামলা করে দু’টি অটোবাইক ভাঙচুর করা হয়। তবে ভাঙচুরের বিষয়টি পুলিশকে জানালেও রহস্যজনক কারণে সোমবার দুপুরে পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে।
এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে গাজীপুর পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ জানান, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়টি তিনি শুনেছেন।
তবে তার দাবি, ওই গ্রামের বাসীন্দারা মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে। আর শীর্ষ সন্ত্রাসী রফিক ও মাদক কেনা-বেচায় জড়িত। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়াসহ হামলা ও ভাঙচুরের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *