সাদুল্যাপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে
সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় বৈশাখী মেলার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর এক দফা সংর্ঘষের পর তৃতীয় দফায় রবিবার সকালে প্রতিপক্ষরা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতংক সৃস্টি করে ধারালো অস্ত্রের আঘাতে আবু তালেব (৪৫) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে নিহত করেছেন। তিন দফা সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের শিশুসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। খবর পেয়ে ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পুলিশদল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। সাদুল্যাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের রাঘবেন্দ্রপুর ও ধাপেরহাট ইউনিয়নের তিলকপাড়া গ্রামের মধ্যে রবিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত আবু তালেব ইদিলপুর ইউনিয়নের চকনদি গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওই গ্রামের পচা মাহমুদ কবিরাজের ছেলে। এ ঘটনায় পুলিশ তিন জনকে আটক করেছেন। আটকরা হলেন- ইদিলপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের আজিম উদ্দিনের ছেলে ফুল মিয়া (৪০), রাজু মিয়ার ছেলে সাহেব আলী (৩১) ও তছির উদ্দিনের ছেলে হায়দার আলী (৫০)। স্থানীয়দের বরাত দিয়ে ধাপেরহাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন জানান, রাঘবেন্দ্রপুর গুচ্ছগ্রামে শুক্রবার দিনব্যাপী বৈশাখী মেলার আয়োজন করে এলাকার ইউপি সদস্য নূর মোহাম্মাদসহ কতিপয় যুবকরা। মেলায় ১০-১২ বছরের কতিপয় শিশু-কিশোর তাস দিয়ে চুকচুকি নামক একটি জুয়া খেলা বসায়। রাঘবেন্দ্রপুর গ্রামের কয়েকজন কিশোর ও যুবকের জুয়া খেলায় টাকা খোয়া যায়। তারা টাকা খোয়া যাওয়াকে কেন্দ্র করে মেলা সংলগ্ন ধাপেরহাট ইউনিয়নের তিলকপাড়া গ্রামের জুয়া আয়োজনকারী কয়েকজন শিশু-কিশোরকে মারপিট করে। পরবর্তীতে ওই বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যে প্রথম দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের শিশুসহ ১০ জন আহত হন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। তিনি আরও জানান, শুক্রবারের ঘটনার জের ধরে শনিবার সকালে রাঘবেন্দ্রপুর গ্রামের আয়নাল মিয়ার ছেলে অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র আল আমিন মাদ্রাসায় ক্লাস করতে গিয়ে কয়েক যুবকের হাতে মারধরের শিকার হন। পরে পুলিশ পাঠিয়ে তাকে উদ্ধার করা হয়। মাদ্রাসা ছাত্রকে মারধর ও পূর্বের ঘটনার জের ধরে রাঘবেন্দ্রপুর, কাঠাল লক্ষীপুর গ্রামের শতাধিক লোকজন লাঠি, বল্লম দা কুড়াল,ককটেল ও দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে রবিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে পুনরায় তিলকপাড়া গ্রামের লোকজনের উপর হামলা চালায়। এসময় উভয় গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। সংঘর্ষের সময় ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ঘটনাস্থলে আবু তালেব মারা যান। কয়েক দফায় সংঘর্ষে আহতরা হলেন- লিখন মিয়া (১১), আজাদুল (২২), আশরাফুল (২৫), লিটন মিয়া (১৬), সফু মিয়া (৪০), সিরাজুল ইসলাম (৩২) শাহাবুল হোসেন (২৮) বকুমিয়া (২০), আল আমিন (১৪)। এদের মধ্যে লিখনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করা হয়েছে। ইদিলপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হাসানুর রহমান ও ধাপেরহাট ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম শিপন জানান, দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে মেলার আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সাদুল্যাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়া লতিফুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান,এ ঘটনায় আবু তালেবের ছেলে আবু তাহের বাদী হয়ে থানায় একটি হত্যা মামলার এজাহার দিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসা বাদের জন্য আটক করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান তিনি।