কেশবপুরে মাছের ঘেরের বেড়ি হিসেবে সড়ক ব্যবহার বন্ধের নির্দেশ : ১২২ মাছের ঘের চিহ্নিত

03কেশবপুর(যশোর) : বারংবার সরকারী নির্দেশনাকে বৃদ্ধাঙ্গলী প্রদর্শন করে যশোরের কেশবপুরের মাছের ঘের মালিকরা সড়ক ও জনপথ, জেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভার সড়ক এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের বেড়ি বাঁধ তাদের ঘেরের বেড়ি বাঁধ হিসেবে ব্যবহার করার ফলে যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের কেশবপুর এলাকার প্রায় ১কি.মি.সড়কসহ গ্রামীন ৩০ কিলোমিটার রাস্তায় ফাটল ও ধ্বসে যাচ্ছে। গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষায় বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর  প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আনেন স্থানীয় এমপি জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ইসমাত আরা সাদেক। তিনি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে তদন্তপুর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ দিয়েছেন। সে মোতাবেক মৎস্য অফিস থেকে সরেজমিন ঘের পরিদর্শন করে ক্ষতিকর ঘেরগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মধ্যে ১২২টি মাছের ঘেরের  বেড়ি করা হয়েছে সরকারি রাস্তার পাশ দিয়ে। কেশবপুর উপজেলায় ছোট বড় মিলিয়ে ৩ হাজার ৬৩১টি মাছের ঘের রয়েছে। ঘেরগুলি অপরিকল্পিত ভাবে করায় সরকারি রাস্তা ঘেরের বেড়ি হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। ঘেরে মাছের খাদ্য হিসেবে রাসায়নিক সার ব্যবহার করাসহ রাস্তা দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল করার পাশাপাশি অতি বৃষ্টি ও ঘেরের পানির প্রচন্ড ঢেউয়ে রাস্তায় দ্রুত ফাটল ও ধ্বসে যাচ্ছে। কেশবপুর-সরসকাটি, গৌরিঘোনা, পাঁজিয়া, বগা, গড়ভাঙ্গা ও ব্যসডাঙ্গা সড়কসহ  প্রায় ৫০টি গুরুত্বপূর্ণ সড়কের সিংহভাগ সড়ক ঘেরের গর্ভে বিলিন হয়ে যাচ্ছে। এতে এসব সড়ক দিয়ে চলাচলকারী মালবাহি ও যাত্রিবাহি যান চলাচলে দূর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। এদিকে যশোর-সাতক্ষীরা এই ব্যস্ততম সড়কের মনিরামপুর উপজেলার ছাতিয়ানতলা নামক স্থান থেকে কেশবপুর পৌর শহর পযর্ন্ত ৪কি.মি.সড়কের পাশ দিয়ে কোন আলাদা বেড়িবাঁধ না দিয়ে উভয় পাশে ঘের করায় সড়কের প্রায় ১০টি স্থানে বড় বড় ধ্বস নেমে ফাটল শুরু হয়েছে। পাশাপাশি এসব ঘেরে মাছের খাদ্য হিসেবে রাসায়নিক সার ব্যবহার করায় ঘের বেড়ির আশপাশের গাছগাছালি মরে যাচ্ছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগের  যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের দূরত্ব ৬৮কি.মি.। সাতক্ষীরার ভোমরায় বৃহত্তম স্থলবন্দর হওয়ায় এই সড়কটির গুরুত্ব অপরিসীম। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন শত শত মালবাহী ট্রাক, ঢাকা চট্টগ্রামের পরিবহন ও যাত্রিবাহী বাস চলাচল করে। কেশবপুরের ঘের মালিকরা তাদের ইচ্ছা মত সরকারী সড়ক ও গ্রামীন রাস্তাগুলোকে তাদের ঘেরের বেড়িবাঁধ হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। যাতে সরকারের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নে বিঘœ সৃষ্টি হচ্ছে। ২০০২-০৩ অর্থবছরে যশোর সাতক্ষীরা এই সড়কটির টেকসই সহ দৃষ্টি নন্দন করতে যশোর জেলা পরিষদের অনুমতি সাপেক্ষে স্থানীয় উপজেলা বনায়ন প্রকল্পের আওতায় কেশবপুর মধ্যকুল সমবায় সমিতি এই সড়কের ছাতিয়ানতলা থেকে কেশবপুর পযর্ন্ত ৪কি.মি. সড়কের দু’ধারে সাড়ে ৪ হাজার বাবলা, মেহগনী ও ভুতনিমের চারা রোপন করে। বর্ষা মৌসুমে সড়ক ধ্বসে রোপনকৃত গাছ গত বছর ঘেরের অভ্যন্তরে চলে যায়। আর এর কারণে সরকারের প্রতিবছর গ্রামীণ অবকাঠোমো প্রকল্প রাস্তা সংস্কার কর্মসূচি জনগণের চলাচলের সুবিধার চেয়ে ঘের মালিকদের উপকার হচ্ছে। পাশাপাশি গ্রামীণ জনপদ ধ্বংস হতে চলেছে। এ ব্যপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা রাজ কুমার বিশ্বাস জানান, প্রতিমন্ত্রী মহোদয়ের নির্দেশনা পেয়ে ইতোমধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। মজিদপুর ইউনিয়নের দুটি ঘের রাস্তার পাশে রিং বেড়ি করার কাজ শুরু করেছে। যারা নির্দেশনা মোতাবেক বেড়ি তৈরী করবেন না, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *