পেট্রোল বোমায় নিহত চালকের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম

Sna2166666বেনাপোল-শার্শা প্রতিনিধি : চাঁদপুরে অবরোধকারীদের ছোড়া পেট্রোল বোমায় নিহত ট্রাক চালক জাহাঙ্গীরের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কের পাশে যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআচড়া ইউনিয়ানের বেলতলা এলাকায় জাহাঙ্গীরের বাড়ি। এলাকাটি যশোর এবং সাতক্ষীরা জেলার সীমানা বরাবর স্থানে। পাকা রাস্তার ধারে বাড়িটি ইট ও বেড়া দিয়ে তৈরি টালির ছাউনি। একটি মাত্র ঘর। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটার পরপরই তার স্বজনরা খবরটি পায়। তার পর থেকে বাড়িতে স্বজনদের আহাজারি শুরু হয়।
আট জনের সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে জাহাঙ্গীরের স্বজনরা বিলাপ করছেন। মৃতের দুই সন্তান জাহিদ(৫) ও সাইদকে(২) জড়িয়ে ধরে স্ত্রী খাদিজা বেগম বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। ছেলের মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না জাহাঙ্গীরের বৃদ্ধা মা সাজেদা বেগম। বারবার বিলাপ করছেন আর বলছেন, আমাদের এখন কি হবে? আমরাতো রাজনীতি করিনে। আমাদের দ্বায়িত্ব কে নেবে?
জাহাঙ্গীরের বড় বোনের মেয়ে রাজিয়া সুলতানা ছোটবেলা থেকেই মামার বাড়িতে থাকে। মামার আদর যতেœ বড় হয়ে আজ বাগআচড়া বালিকা বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেনীতে পড়ছে। সকল খরচ বহন করতেন মামা জাহাঙ্গীর। মামার মৃত্যুর সংবাদ তার সকল স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। তার আর্তনাদ সকলের চোখের কোনে পানি এনে দিচ্ছে। রাজিয়া বিলাপ করে বলছে, আমার এখন কি হবে? আমি কোথায় যাব? কে আমাকে দেখবে? কে নেবে আমার দ্বায়িত্ব?
জাহাঙ্গীরের বাবা ভ্যান চালক সুরত আলিকে সঙ্গে নিয়ে বাগআচড়া,নাভারন,বেনাপোল সড়ক পরিহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি,সাধারন সম্পাদকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল জাহাঙ্গীরের লাশ গ্রহন করার জন্য বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বাগআচড়া থেকে চাঁদপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
সাধারন সম্পাদক আনিছুর রহমান কিনা বলেন,সোমবার বাগআচড়া থেকে গরু নিয়ে জাহাঙ্গীর চট্রগ্রামে যায়।সেখানে গরু পৌঁছে দিয়ে ট্রাকে কাগজ তুলে আবারও যশোরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ট্রাক চালকের সহকারি রুবেল, একজন গরু ব্যবসায়ী খোরশেদ আলম এবং ট্রাকের মালিক শরিফুল ইসলামও ওই ট্রাকে ছিলেন। তাদের বাড়ি যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার বারাকপুর শেখ পাড়ায়।
শার্শা উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.টি.এম শরীফুল আলম বলেন,আমি নিহত জাহাঙ্গীরের বাড়িতে গিয়ে তার শোকাহত পরিবারকে সমবেদনা জানাই এবং তাদেরকে প্রশাসনের তরফ থেকে আর্থিক ও অন্যান্য সহযোগিতার ব্যাপারে আশ্বস্ত করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *